Friday, March 21, 2014

কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন

এধরনের প্রশ্ন কেউ করলে বিরক্ত হতে পারেন। এটা কোন প্রশ্ন হল! যে ছবির জন্য যে মোড সেটাই তো ব্যবহার করবেন। এজন্যই পোট্রেট, ল্যান্ডস্কেপ, ক্লোজআপ ইত্যাদি মোড তৈরী করা হয়েছে।
কথাটা ঠিক। এই মোডগুলির পরও রয়েছে এপারচার প্রায়োরিটি এবং সাটার স্পিড প্রায়োরিটি বলে দুটি মোড। এবং সবশেষে ফুল ম্যানুয়েল বলে একটি মোড। যেখানে সাটারস্পিড, এপারচার থেকে শুরু করে সমস্ত সেটিং আপনি ঠিক করে দিতে পারেন।
বর্তমানের প্রায় সব কম্প্যাক্ট এবং এসএলআর ক্যামেরাতেই রয়েছে অনেকগুলি সিন মোড। সাধারনভাবে ছবি উঠানোর সময় আপনার ক্যামেরা থেকে পছন্দের সিন মোড ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা সেটিং এরজন্য ক্যামেরার ওপর নির্ভর করেন না। তারা এই নিয়মের বাইরে ছবি উঠান। কারন একটাই, তারা নিজের পছন্দের কিছু চান। এবং শুনে অবাক হতে পারেন, সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এপারচার প্রায়োরিটি মোড।
বিষয়টি বোঝার জন্য এপারচার কি কাজ করে একটু দেখে নেয়া যাক।
এপারচার হচ্ছে লেন্সের জানালা। যখন পুরোটা খোলা থাকে তখন বেশি আলো প্রবেশ করে, যখন কম খোলা থাকে তখন কম আলো প্রবেশ করে। এপারচার প্রকাশ করা হয় সংখ্যা দিয়ে। ছোট সংখ্যা বেশি এপারচার বুঝায়। যেমন ৩.৫ এপারচারে ক্যামেরায় যে আরো প্রবেশ করবে ২২ এপারচারে তারথেকে আলো অনেক কম পাওয়া যাবে।
কাজেই, এপারচার কন্ট্রোল করার একটি প্রধান কারন সঠিক আলো ব্যবহার। বাইরে যদি আলো বেশি থাকে তাহলে সেটা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য এপারচারের মান কমাবেন (সংখ্যায় বাড়াবেন), আবার বিপরীতভাবে আরো কম থাকলে বেশি আলো পাবার জন্য এপারচার বাড়াবেন (সংখ্যা কমাবেন)। এপারচার কতটাগুরুত্বপুর্ন জানার জন্য এসএলআর এর লেন্সের দামের পার্থক্য একটু জেনে নিন। সর্বোচ্চ ৩.৫ এপারচারের লেন্স কেনা যায় কয়েকশ ডলারে, সর্বোচ্চ ২ এপারচারের লেন্সের দাম কয়েক হাজার ডলার।
কাজেই এপারচারের কাজ আলো নিয়ন্ত্রন করা থেকেও বেশি কিছু।  এপারচার যত ছোট হয় ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি হয়। যেমন আপনি ল্যান্ডস্কেপের ছবি উঠাচ্ছেন যেখানে সামনের গাছপালা, দুরের পাহাড়, আকাশে মেঘ সবকিছুই স্পষ্টভাবে  পেতে চান। সেক্ষেত্রে বেশি এপারচার ভাল ফল দেবে। কেউ কেউ নির্দিস্ট করে বলে দেন ল্যান্ডস্কেপের জন্য আদর্শ এপারচার সেটিং হচ্ছে ২২।
আর এপারচার যত বেশি হয় ডেপথ অব ফিল্ড তত কম হয়। একেবারে অল্প কিছু যায়গার বিষয়কে স্পষ্ট দেখা যায়, তারপরই বাকি অংশগুলি ঝাপসা হতে থাকে। আপনি একটি ফুলের ছবি উঠাচ্ছে যেখানে অন্যান্য ফুল-গাছপালাগুলি ঝাপসা দেখা যাবে, এজন্য বেশি এপারচার প্রয়োজন।
আপনি যখন এপারচার প্রায়োরিটি মোডে ছবি উঠাচ্ছেন তখন খুব সহজেই এপারচার পরিবর্তনের সুযোগ আপনার হাতে থাকছে। এপারচার প্রায়োরিটি মোডে এপারচার পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে সাটারস্পিড পরিবর্তিত হয়। কাজেই ওভারএক্সপোজার কিংবা আন্ডার এক্সপোজারের ভয় নেই। সেকারনেই এপারচার প্রায়োরিটি মোডের ব্যবহার এত বেশি।
সাটার স্পিড প্রায়োরিটি বিষয়টি বোঝা সেতুলনায় সহজ। আপনি হয়ত উড়ন্ত পাখি কিংবা চলন্ত গাড়ির ছবি উঠাচ্ছেন। সাটার স্পিড বেশি হলে স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে, কম হলে গতির কারনে চলমান অংশগুলি ঝাপসা হবে। আপনি কোনটি চান সেটা ঠিক করার জন্য সাটারস্পিড প্রায়োরিটি মোড ব্যবহার করবেন। সাটারস্পিড প্রায়োরিটি মোডে পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে এপারচার পরিবর্তিত হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখবেন।
আর যখন এপারচার এবং সাটার স্পিড দুটিই নিজের পছন্দমত ব্যবহার করতে চান তখন ম্যানুয়েল মোড। কাজের সুবিধের জন্য এপারচার অথবা সাটার স্পিড যেটা বেশি গুরুত্বপনুর্ন সেটা সিলেক্ট করে ক্যামেরায় অন্যটির মান দেখে নিতে পারেন।
ডিসক্লেইমার: প্রথমেই একটা জিনিস ক্লিয়ার করে রাখা ভালো. আমি মোটেও কোনো ফটোগ্রাফার নই. মাঝে মাঝে টুকটাক কিছু ছবি তুলি, এই যা. আমার মূল আগ্রহ হচ্ছে ম্যানিপুলেটিভ/ট্রিক ফটোগ্রাফি আর ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি কারণ এইগুলান অনেক সহজ. তবে একটা কথা অস্বিকার করার কোনো উপায় নেই আর তা হচ্ছে যে ফটোগ্রাফি সস্তা না. বেশ ভালো রকম খরচ আছে. আর আমার তিনটা যে প্রধান শখ, মাছ ধরা, সিনেমা আর ফটোগ্রাফি, আল্লায় দিলে সবগুলাই এক্সপেন্সিভ. শখও পুরাইতে মন চায় আবার টাকাও নাই, তাই কি আর করা, খুইজা পাইতা কয়েকটা উপায় পাইছি কিছু টাকা বাচানোর. এই সিরিজে আমি মূলত সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করব. আর কেউ যদি অন্য কোনো উপায় জেনে থাকেন, জানাবেন, এড করে দেব নে মূল পোস্টএর সাথে.
ভুমিকা: সেদিন দেখলাম অর্বাচীন স্বাপ্নিক ভাই চমত্কার একটা সিরিজ লিখলেন যেখানে ক্যামেরার অনেক জটিল খুটিনাটি বিষয় তিনি খুব সহজে ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন. ঐটা দেখেই আমার এই পোস্টএর কথা মনে হলো. আমি এখানে যেটা করব, তা হচ্ছে ক্যামেরার বেসিক তিনটা জিনিসকে হালকা ভাবে তুলে ধরব, তারপরে আসল কথায় যাব. আমি অতটা ডিটেলসএ যাব না যেহেতু স্বাপ্নিক ভাই সেটা অলরেডি করে রাখছেন. যাই হোক, আসল কথায় আসি. কেন আমি সরাসরি আমার পোস্টএর বিষয়বস্তুতে যাচ্ছি না সেটা যখন আসল প্রসঙ্গে যাব, তখন বুঝতে পারবেন. তখন এই বেসিক টার্ম ব্যবহার করব আর এগুলো আগে থেকে জেনে রাখলে বুঝতে একটু সুবিধে হবে. তখন ব্যাপারটা ধরতে সুবিধে হবে সবার.
আমি এখানে শুধুই এসএলআর ক্যামেরার কথা বলব. ফিল্ম ক্যামেরার ব্যাপারে আমার কোনো ধারনাই নাই, কখনো ব্যবহার করা তো দুরের কথা. যেই তিনটে জিনিস মানুষের জানা মোটামুটি সহজ আর জরুরি একইসাথে, সেই তিনটে হচ্ছে শাটার স্পিড, এপারচার/ডেপ্ত অফ ফিল্ড এবং আইএসও.
শাটার স্পিড- এটা হচ্ছে অনেকটা জানালার পাল্লা. প্রতিটা ক্যামেরাতেই যখন আপনি ছবি তোলার জন্যে বোতামে চাপ দিবেন, তখন ক্লিক করে একটা শব্দ হয় আর আমরা বুঝতে পারি যে ছবি তোলা হয়ে গেছে. এটাই হচ্ছে শাটার. সাধারণ ক্যামেরাতে এটা কন্ট্রোল করার কোনো উপায় থাকে না. কিন্তু এসএলআর ক্যামেরাগুলোর দাম এত বেশি এই কারণেই যে এটাতে ব্যবহারকারীর হাতেই সব কন্ট্রোল থাকে. কল্পনা করুন যে একটা রুমে আপনি বসে আছেন, এবং আপনার সামনে জানালা আর সেই জানালা দিয়ে বাইরে দেখা যায়. যদি কেউ এক সেকেন্ডএর জন্যে সেই জানালা খুলে দেয়, তাহলে আপনি এক সেকেন্ডএর মধ্যে বাইরে যা যা হয়, তার সব দেখতে পাবেন. আর যদি কেউ ৫ সেকেন্ড খোলা রাখে, তাহলে সেই পরিমান দেখতে পাবেন. শাটার ব্যাপারটাও তাই. ক্যামেরার বডিতে একটা পাল্লা থাকে, সেটা ঝট করে খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায় আর ছবিটা তোলা হয়ে যায়. আপনি ইচ্ছে করলে খুব দ্রুত কাজটা সারতে পারেন, আবার ধীরে ধীরেও সারতে পারেন. পার্থক্য হচ্ছে, যত লম্বা সময় শাটার খোলা থাকবে, আপনার ছবিতে আলোর পরিমান তত বেশি বাড়বে. আর যত তারাতারি বন্ধ করবেন, তত কম আলো প্রবেশ করবে. ধরুন, আপনি দিনের বেলায় উজ্জল সুর্যের আলোয় কারো ছবি তুলছেন, তখন আপনাকে না চাইলেও শাটার স্পিডএর খুব দ্রুত রাখতে হবে. না হলে আপনার ছবি ঝলসে যাবে. আবার সন্ধার সময়ে বা রাতে আপনার শাটার স্পিড হতে হবে স্লো না হলে আপনার ছবি হবে অন্ধকার. এখানে আরো একটা জিনিস আপনাকে মনে রাখতে হবে. যত ফাস্ট শাটার স্পিড, তত বেশি সাবজেক্টএর গতি কমে আসবে, যেমন চলন্ত গাড়ির ছবি তুলতে পারবেন ফাস্ট শাটার স্পিড দিয়ে যেখানে দেখলে মনে হবে রাস্তার সব গাড়ি দাড়িয়ে আছে আপনার জন্যে. কিন্তু আসলে ওই গাড়ি প্রতি সেকেন্ডএ যত স্পিডএ যাচ্ছিল, আপনি তার থেকেও ফাস্ট শাটার স্পিড ব্যবহার করাতে ঐটা হয়েছে. একই কথা খাটে উল্টো বেলাতেও. যত স্লো থাকবে স্পিড, তত বেশি মনে হবে যে ছবি তোলার সময়ে সাবজেক্ট আউট অফ ফোকাস কারণ আপনার সাবজেক্ট আপনার শাটার স্পিডএর থেকে বেশি স্পিডএ নড়ছে. একটা উদাহরণ দিলেই বুঝবেন.

এই ছবিটা দেখুন. এটা আমার তোলা না, গুগল থেকে ধার নিছি. প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, শাটার স্পিডকে বর্ণনা করা হয় সাধারণত এক সেকেন্ডএর কতভাগ সেই অনুযায়ী. যেমন এক সেকেন্ডএর ১০০ভাগএর এক ভাগ হচ্ছে ১/১০০ s. আমি ঠিক শিওর না শাটার স্পিড কোনটাতে কত, কিন্তু প্রথমটাতে ব্যবহার করা হয়েছে সবথেকে দ্রুত, আর তাই দেখে মনে হচ্ছে ঘূর্ণিটা থেমে আছে আর দ্বিতীয়টাতে শাটারএর স্পিড একটু কমানো আর তাই ওরকম দেখাচ্ছে আর তৃতীয়টাতে সবথেকে স্লো.
এপারচার/ডেপ্ত অফ ফিল্ড- প্রতিটা লেন্সএ একটা দেয়াল থাকে যেটার ভেতরে গর্ত করা থাকে. ছবি তোলার সময়ে সাধারণত আলো প্রথমে এই গর্ত পার হয়ে তারপরে শাটারএ যায়. স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটা ক্যামেরার শাটার স্পিড ম্যাক্সিমাম আর মিনিমাম বদলে না যেহেতু সেটা ক্যামেরার বডিতে থাকে. কিন্তু এপারচার যেহেতু লেন্সএ থাকে, তাই একেক লেন্সএ একেক রকম থাকে এটা. এই এপারচার নাম্বার বলা হয় সাধারণত f নাম্বার দিয়ে. নাম্বারটা যত বড় হয়, তার মানে হচ্ছে গর্তটার পরিধি তত ছোট হয় আলো প্রবেশ করার জন্যে, আর নাম্বারটা যত ছোট হয়, গর্তের পরিধি বেড়ে যায় সেই অনুসারে আর আলো প্রবেশ করতেও পারে তত বেশি. লেন্সএর প্রকারভেদএ নির্ণয় হয় কোন লেন্সএর কত সর্বনিম্ব/সর্বোচ্চ ক্ষমতা. এমনিতে সর্বনিম্ন হয় ১.৪ থেকে আর বাড়তে বাড়তে সেটা যেতে পারে ৭২ পর্যন্ত.

প্রথম ছবিটা লক্ষ্য করুন, ঐযে কালোর ভেতরে ছোট্ট একটা সাদা সার্কল দেখতে পাচ্ছেন, এই লেন্স তখন সেট করা ছিল খুব সম্ভব f-১১ অথবা f-১২তে. ওই লেন্স যদি ওই অবস্থায় আমার ক্যামেরায় সেট করা থাকত, আমার শাটার স্পিড যাই হোক না কেন, আলোকে আগে ওই গর্ত দিয়েই প্রবেশ করতে হবে, তারপরে আমার শাটারএ গিয়ে ধাক্কা দেবে. এরপরের ছবিটাতে দেখুন গর্ত অনেক বড় আর তার মানে আলো এখানে অনেক বেশি প্রবেশ করার জায়গা পাবে. এখানে দ্বিতীয় ছবিটাতে দেখুন যে ওই সাদা বৃত্ত অনেকখানি খোলা. আলো প্রবেশ করার জন্যে অঢেল জায়গা. এখানে আমি আমার লেন্সএর যে ম্যাক্সিমাম ক্ষমতা, সেটাই প্রয়োগ করেছিলাম. আমার লেন্সএর ম্যাক্সিমাম হচ্ছে f-১.৮. এবং আমি যতদুর জানি, ১.৪ও আছে. আর তৃতীয় ছবিতে ওই বৃত্তের ব্যাসার্ধ সবথেকে কম. এখানে আমি আমার ব্যবহার করেছি f-২২. আমার এমন লেন্সও আছে যেটাতে আমি f-৬৪ পর্যন্ত যেতে পারি. এখন কল্পনা করুন যে আলো প্রবেশ করার জন্যে কত কষ্ট. বেশির ভাগ সময়েই সাধারণত মানুষ ব্যবহার করে ম্যাক্সিমাম f-১৫-f-১৬. এর উপরে যাওয়া লাগে না তেমন একটা. তবে অনেকে ব্যবহার করে বিশেষ উদ্দেশ্য যদি থাকে, তখন.
একটা প্রশ্ন জাগতে পারে মনে যে এপারচার তো না হয় বুঝলাম, কিন্তু ডেপ্ত অফ ফিল্ডটা আবার কি জিনিস. ওয়েল, আপনার সাবজেক্টএর আশেপাশে, সামনে পিছনে যা আছে, তার কতখানি আপনি ফোকাসএ রাখতে চান, তাকেই বলে ডেপ্ত অফ ফিল্ড. এটা হতে পারে খুবই শ্যালো বা খুবই হাই ডেপ্ত অফ ফিল্ড. যেমন ধরুন, সব থেকে শ্যালো হচ্ছে সব থেকে নিম্ন নাম্বার. যদি আমি ব্যবহার করি ১.৪, তাহলে আমার সাবজেক্টএর কিছু অংশ ছাড়া আর বাকি সব, সামনে, পেছনে, ডানে, বায়ে সব ঝাপসা থাকবে. ফলে যে ওই ফটো দেখবে, তাকে আমি বাধ্য করছি তার সমস্ত মনোযোগ শুধুই আমার সাবজেক্টএর উপরে রাখতে. কখন কোথায় কি ভাবে কি করবেন, সেটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে আপনার উপরে.

তৃতীয় ছবিটা ছিল f-৩২ এ তোলা. যার ফলে, মোটামুটি সব কিছুই ফোকাসে এসেছে. মাঝামাঝিটা হচ্ছে আইডিয়াল নাম্বারে তোলা, f-১১. যদিও স্পেসিফিক কোনো নাম্বার নেই পারফেক্ট হিসেবে তবে এমন যদি হয় যে আপনি গ্রুপ ফটো তুলছেন, তাহলে ১১-১৬ এর মধ্যে থাকলেই হবে. এর বেশি গেলে আবার গর্ত বেশি ছোট হয়ে যায়, তখন আবার আলো প্রবেশ করতে পারে কিনা যথেষ্ঠ, সেই টেনশন আসে. আর প্রথম ছবিটা দেখুন. এটা তোলা হয়েছে ১.৮ দিয়ে. এবার পার্থক্যটা বুঝতে একটু সুবিধে হবে আপনার.
আইএসও- এটা তেমন একটা জরুরি না বিগিনারদের জন্যে. এটা একটু কম্পলিকেটেড. আমি নিজেও এটা নিয়ে খুব একটা ঘুতাঘুতি করি না. বেসিকলি এটা হচ্ছে আপনার ছবি আলোর প্রতি কতখানি সংবেদনশীল, তা. এর নাম্বার শুরু হয় সাধারণত ১০০ থেকে আর বাড়তে বাড়তে হতে পারে ২০০০ বা তারও বেশি. আমি আমারটা সাধারণত ২০০তে দিয়ে রাখি, কখনো বদলায় না.

এখানে তুলনা করে দেখুন দুই ছবি. গুগল থেকে মারা. খেয়াল করে দেখুন যে দ্বিতীয় ছবিটাতে অনেক ছোট ছোট সাদা সাদা দাগএর মতন. এই হচ্ছে আইএসও. অন্ধকারএ ছবি তলার সময়ে এই আইএসও নাম্বার বাড়ালে উপকার হয়, কিন্তু এগেইন, আমি নিজে এইটা নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাই না, বুঝিও না. আপনারা যারা এটা নিয়ে আরো ভালোভাবে জানতে চান, গুগলএ গিয়ে এটা লিখে সার্চ দিলেই অনেক কিছু পেয়ে যাবেন.
এতক্ষণ অনেক গ্যাজাইলাম ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়া. সামনের পর্বে কিছু বেসিক আইডিয়া দেব ক্যামনে কিপটামি করা যায়.
- See more at: http://www.nagorikblog.com/node/13146#sthash.HQi6qY6x.dpuf
ডিসক্লেইমার: প্রথমেই একটা জিনিস ক্লিয়ার করে রাখা ভালো. আমি মোটেও কোনো ফটোগ্রাফার নই. মাঝে মাঝে টুকটাক কিছু ছবি তুলি, এই যা. আমার মূল আগ্রহ হচ্ছে ম্যানিপুলেটিভ/ট্রিক ফটোগ্রাফি আর ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি কারণ এইগুলান অনেক সহজ. তবে একটা কথা অস্বিকার করার কোনো উপায় নেই আর তা হচ্ছে যে ফটোগ্রাফি সস্তা না. বেশ ভালো রকম খরচ আছে. আর আমার তিনটা যে প্রধান শখ, মাছ ধরা, সিনেমা আর ফটোগ্রাফি, আল্লায় দিলে সবগুলাই এক্সপেন্সিভ. শখও পুরাইতে মন চায় আবার টাকাও নাই, তাই কি আর করা, খুইজা পাইতা কয়েকটা উপায় পাইছি কিছু টাকা বাচানোর. এই সিরিজে আমি মূলত সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করব. আর কেউ যদি অন্য কোনো উপায় জেনে থাকেন, জানাবেন, এড করে দেব নে মূল পোস্টএর সাথে.
ভুমিকা: সেদিন দেখলাম অর্বাচীন স্বাপ্নিক ভাই চমত্কার একটা সিরিজ লিখলেন যেখানে ক্যামেরার অনেক জটিল খুটিনাটি বিষয় তিনি খুব সহজে ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন. ঐটা দেখেই আমার এই পোস্টএর কথা মনে হলো. আমি এখানে যেটা করব, তা হচ্ছে ক্যামেরার বেসিক তিনটা জিনিসকে হালকা ভাবে তুলে ধরব, তারপরে আসল কথায় যাব. আমি অতটা ডিটেলসএ যাব না যেহেতু স্বাপ্নিক ভাই সেটা অলরেডি করে রাখছেন. যাই হোক, আসল কথায় আসি. কেন আমি সরাসরি আমার পোস্টএর বিষয়বস্তুতে যাচ্ছি না সেটা যখন আসল প্রসঙ্গে যাব, তখন বুঝতে পারবেন. তখন এই বেসিক টার্ম ব্যবহার করব আর এগুলো আগে থেকে জেনে রাখলে বুঝতে একটু সুবিধে হবে. তখন ব্যাপারটা ধরতে সুবিধে হবে সবার.
আমি এখানে শুধুই এসএলআর ক্যামেরার কথা বলব. ফিল্ম ক্যামেরার ব্যাপারে আমার কোনো ধারনাই নাই, কখনো ব্যবহার করা তো দুরের কথা. যেই তিনটে জিনিস মানুষের জানা মোটামুটি সহজ আর জরুরি একইসাথে, সেই তিনটে হচ্ছে শাটার স্পিড, এপারচার/ডেপ্ত অফ ফিল্ড এবং আইএসও.
শাটার স্পিড- এটা হচ্ছে অনেকটা জানালার পাল্লা. প্রতিটা ক্যামেরাতেই যখন আপনি ছবি তোলার জন্যে বোতামে চাপ দিবেন, তখন ক্লিক করে একটা শব্দ হয় আর আমরা বুঝতে পারি যে ছবি তোলা হয়ে গেছে. এটাই হচ্ছে শাটার. সাধারণ ক্যামেরাতে এটা কন্ট্রোল করার কোনো উপায় থাকে না. কিন্তু এসএলআর ক্যামেরাগুলোর দাম এত বেশি এই কারণেই যে এটাতে ব্যবহারকারীর হাতেই সব কন্ট্রোল থাকে. কল্পনা করুন যে একটা রুমে আপনি বসে আছেন, এবং আপনার সামনে জানালা আর সেই জানালা দিয়ে বাইরে দেখা যায়. যদি কেউ এক সেকেন্ডএর জন্যে সেই জানালা খুলে দেয়, তাহলে আপনি এক সেকেন্ডএর মধ্যে বাইরে যা যা হয়, তার সব দেখতে পাবেন. আর যদি কেউ ৫ সেকেন্ড খোলা রাখে, তাহলে সেই পরিমান দেখতে পাবেন. শাটার ব্যাপারটাও তাই. ক্যামেরার বডিতে একটা পাল্লা থাকে, সেটা ঝট করে খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায় আর ছবিটা তোলা হয়ে যায়. আপনি ইচ্ছে করলে খুব দ্রুত কাজটা সারতে পারেন, আবার ধীরে ধীরেও সারতে পারেন. পার্থক্য হচ্ছে, যত লম্বা সময় শাটার খোলা থাকবে, আপনার ছবিতে আলোর পরিমান তত বেশি বাড়বে. আর যত তারাতারি বন্ধ করবেন, তত কম আলো প্রবেশ করবে. ধরুন, আপনি দিনের বেলায় উজ্জল সুর্যের আলোয় কারো ছবি তুলছেন, তখন আপনাকে না চাইলেও শাটার স্পিডএর খুব দ্রুত রাখতে হবে. না হলে আপনার ছবি ঝলসে যাবে. আবার সন্ধার সময়ে বা রাতে আপনার শাটার স্পিড হতে হবে স্লো না হলে আপনার ছবি হবে অন্ধকার. এখানে আরো একটা জিনিস আপনাকে মনে রাখতে হবে. যত ফাস্ট শাটার স্পিড, তত বেশি সাবজেক্টএর গতি কমে আসবে, যেমন চলন্ত গাড়ির ছবি তুলতে পারবেন ফাস্ট শাটার স্পিড দিয়ে যেখানে দেখলে মনে হবে রাস্তার সব গাড়ি দাড়িয়ে আছে আপনার জন্যে. কিন্তু আসলে ওই গাড়ি প্রতি সেকেন্ডএ যত স্পিডএ যাচ্ছিল, আপনি তার থেকেও ফাস্ট শাটার স্পিড ব্যবহার করাতে ঐটা হয়েছে. একই কথা খাটে উল্টো বেলাতেও. যত স্লো থাকবে স্পিড, তত বেশি মনে হবে যে ছবি তোলার সময়ে সাবজেক্ট আউট অফ ফোকাস কারণ আপনার সাবজেক্ট আপনার শাটার স্পিডএর থেকে বেশি স্পিডএ নড়ছে. একটা উদাহরণ দিলেই বুঝবেন.

এই ছবিটা দেখুন. এটা আমার তোলা না, গুগল থেকে ধার নিছি. প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, শাটার স্পিডকে বর্ণনা করা হয় সাধারণত এক সেকেন্ডএর কতভাগ সেই অনুযায়ী. যেমন এক সেকেন্ডএর ১০০ভাগএর এক ভাগ হচ্ছে ১/১০০ s. আমি ঠিক শিওর না শাটার স্পিড কোনটাতে কত, কিন্তু প্রথমটাতে ব্যবহার করা হয়েছে সবথেকে দ্রুত, আর তাই দেখে মনে হচ্ছে ঘূর্ণিটা থেমে আছে আর দ্বিতীয়টাতে শাটারএর স্পিড একটু কমানো আর তাই ওরকম দেখাচ্ছে আর তৃতীয়টাতে সবথেকে স্লো.
এপারচার/ডেপ্ত অফ ফিল্ড- প্রতিটা লেন্সএ একটা দেয়াল থাকে যেটার ভেতরে গর্ত করা থাকে. ছবি তোলার সময়ে সাধারণত আলো প্রথমে এই গর্ত পার হয়ে তারপরে শাটারএ যায়. স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটা ক্যামেরার শাটার স্পিড ম্যাক্সিমাম আর মিনিমাম বদলে না যেহেতু সেটা ক্যামেরার বডিতে থাকে. কিন্তু এপারচার যেহেতু লেন্সএ থাকে, তাই একেক লেন্সএ একেক রকম থাকে এটা. এই এপারচার নাম্বার বলা হয় সাধারণত f নাম্বার দিয়ে. নাম্বারটা যত বড় হয়, তার মানে হচ্ছে গর্তটার পরিধি তত ছোট হয় আলো প্রবেশ করার জন্যে, আর নাম্বারটা যত ছোট হয়, গর্তের পরিধি বেড়ে যায় সেই অনুসারে আর আলো প্রবেশ করতেও পারে তত বেশি. লেন্সএর প্রকারভেদএ নির্ণয় হয় কোন লেন্সএর কত সর্বনিম্ব/সর্বোচ্চ ক্ষমতা. এমনিতে সর্বনিম্ন হয় ১.৪ থেকে আর বাড়তে বাড়তে সেটা যেতে পারে ৭২ পর্যন্ত.

প্রথম ছবিটা লক্ষ্য করুন, ঐযে কালোর ভেতরে ছোট্ট একটা সাদা সার্কল দেখতে পাচ্ছেন, এই লেন্স তখন সেট করা ছিল খুব সম্ভব f-১১ অথবা f-১২তে. ওই লেন্স যদি ওই অবস্থায় আমার ক্যামেরায় সেট করা থাকত, আমার শাটার স্পিড যাই হোক না কেন, আলোকে আগে ওই গর্ত দিয়েই প্রবেশ করতে হবে, তারপরে আমার শাটারএ গিয়ে ধাক্কা দেবে. এরপরের ছবিটাতে দেখুন গর্ত অনেক বড় আর তার মানে আলো এখানে অনেক বেশি প্রবেশ করার জায়গা পাবে. এখানে দ্বিতীয় ছবিটাতে দেখুন যে ওই সাদা বৃত্ত অনেকখানি খোলা. আলো প্রবেশ করার জন্যে অঢেল জায়গা. এখানে আমি আমার লেন্সএর যে ম্যাক্সিমাম ক্ষমতা, সেটাই প্রয়োগ করেছিলাম. আমার লেন্সএর ম্যাক্সিমাম হচ্ছে f-১.৮. এবং আমি যতদুর জানি, ১.৪ও আছে. আর তৃতীয় ছবিতে ওই বৃত্তের ব্যাসার্ধ সবথেকে কম. এখানে আমি আমার ব্যবহার করেছি f-২২. আমার এমন লেন্সও আছে যেটাতে আমি f-৬৪ পর্যন্ত যেতে পারি. এখন কল্পনা করুন যে আলো প্রবেশ করার জন্যে কত কষ্ট. বেশির ভাগ সময়েই সাধারণত মানুষ ব্যবহার করে ম্যাক্সিমাম f-১৫-f-১৬. এর উপরে যাওয়া লাগে না তেমন একটা. তবে অনেকে ব্যবহার করে বিশেষ উদ্দেশ্য যদি থাকে, তখন.
একটা প্রশ্ন জাগতে পারে মনে যে এপারচার তো না হয় বুঝলাম, কিন্তু ডেপ্ত অফ ফিল্ডটা আবার কি জিনিস. ওয়েল, আপনার সাবজেক্টএর আশেপাশে, সামনে পিছনে যা আছে, তার কতখানি আপনি ফোকাসএ রাখতে চান, তাকেই বলে ডেপ্ত অফ ফিল্ড. এটা হতে পারে খুবই শ্যালো বা খুবই হাই ডেপ্ত অফ ফিল্ড. যেমন ধরুন, সব থেকে শ্যালো হচ্ছে সব থেকে নিম্ন নাম্বার. যদি আমি ব্যবহার করি ১.৪, তাহলে আমার সাবজেক্টএর কিছু অংশ ছাড়া আর বাকি সব, সামনে, পেছনে, ডানে, বায়ে সব ঝাপসা থাকবে. ফলে যে ওই ফটো দেখবে, তাকে আমি বাধ্য করছি তার সমস্ত মনোযোগ শুধুই আমার সাবজেক্টএর উপরে রাখতে. কখন কোথায় কি ভাবে কি করবেন, সেটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে আপনার উপরে.

তৃতীয় ছবিটা ছিল f-৩২ এ তোলা. যার ফলে, মোটামুটি সব কিছুই ফোকাসে এসেছে. মাঝামাঝিটা হচ্ছে আইডিয়াল নাম্বারে তোলা, f-১১. যদিও স্পেসিফিক কোনো নাম্বার নেই পারফেক্ট হিসেবে তবে এমন যদি হয় যে আপনি গ্রুপ ফটো তুলছেন, তাহলে ১১-১৬ এর মধ্যে থাকলেই হবে. এর বেশি গেলে আবার গর্ত বেশি ছোট হয়ে যায়, তখন আবার আলো প্রবেশ করতে পারে কিনা যথেষ্ঠ, সেই টেনশন আসে. আর প্রথম ছবিটা দেখুন. এটা তোলা হয়েছে ১.৮ দিয়ে. এবার পার্থক্যটা বুঝতে একটু সুবিধে হবে আপনার.
আইএসও- এটা তেমন একটা জরুরি না বিগিনারদের জন্যে. এটা একটু কম্পলিকেটেড. আমি নিজেও এটা নিয়ে খুব একটা ঘুতাঘুতি করি না. বেসিকলি এটা হচ্ছে আপনার ছবি আলোর প্রতি কতখানি সংবেদনশীল, তা. এর নাম্বার শুরু হয় সাধারণত ১০০ থেকে আর বাড়তে বাড়তে হতে পারে ২০০০ বা তারও বেশি. আমি আমারটা সাধারণত ২০০তে দিয়ে রাখি, কখনো বদলায় না.

এখানে তুলনা করে দেখুন দুই ছবি. গুগল থেকে মারা. খেয়াল করে দেখুন যে দ্বিতীয় ছবিটাতে অনেক ছোট ছোট সাদা সাদা দাগএর মতন. এই হচ্ছে আইএসও. অন্ধকারএ ছবি তলার সময়ে এই আইএসও নাম্বার বাড়ালে উপকার হয়, কিন্তু এগেইন, আমি নিজে এইটা নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাই না, বুঝিও না. আপনারা যারা এটা নিয়ে আরো ভালোভাবে জানতে চান, গুগলএ গিয়ে এটা লিখে সার্চ দিলেই অনেক কিছু পেয়ে যাবেন.
এতক্ষণ অনেক গ্যাজাইলাম ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়া. সামনের পর্বে কিছু বেসিক আইডিয়া দেব ক্যামনে কিপটামি করা যায়.
- See more at: http://www.nagorikblog.com/node/13146#sthash.HQi6qY6x.dpuf

No comments:

Post a Comment