Friday, March 21, 2014

ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম ৩

ফটোগ্রাফারদের কাছে এডবি লাইটরুম অত্যন্ত জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যায় আগে ফটোশপ ব্যবহার করতেন এমন অনেকে লাইটরুমের দিকে যাচ্ছেন। এথেকে এটুকু ধারনা করা যায় এতে নিশ্চয়ই এমন কিছু সুবিধে রয়েছে যা ফটোশপ থেকেও বেশি সুবিধে দেয়।

সরলভাবে বিষয়টা দেখা যাক। ফটোগ্রাফাররা প্রচুর ছবি উঠান। কাজেই তাদের কাজ করতে হয় শতশত ছবি নিয়ে। ফটোশপ বেশি ছবি ব্যবহারের সুযোগ দেয় না। একটি একটি করে ছবি নিয়ে কাজ করতে হয়। এই সুবিধে পাওয়া যায় লাইটরুমে।
ফটোগ্রাফারদের প্রয়োজন মুলত ছবির আলো ঠিক করা। কোথাও কমানো, কোথাও বাড়ানো। তাদের নিশ্চয়ই অনেকগুলি লেয়ার নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন নেই, কিংবা প্রয়োজন নেই পেইন্ট করা। কাজেই সেদিক থেকে লাইটরুম ফটোশপের তুলনায় সরল সফটঅয়্যার।
ফটোশপ নিজেই অত্যন্ত শক্তিশালী সফটঅয়্যার। তারওপর রয়েছে অসংখ্যা প্লাগইন। ছবির নয়েজ দুর করা থেকে শুরু করে স্পেশাল ইফেক্ট পর্যন্ত সব ধরনের কাজের জন্য প্লাগইন রয়েছে। এই প্লাগইনগুলির অধিকাংশই ব্যবহার করা যায় লাইটরুমেও। তাহলে আর ফটোশপ প্রয়োজন কি।
আর সবকথার বড় কথা, ফটোশপের দাম লাইটরুম থেকে অনেক বেশি। কাজেই ফটোগ্রাফরদের পছন্দ লাইটরুম।
লাইটরুম সফটঅয়্যারটি প্রচলিত সফটঅয়্যারগুলি থেকে একটু পৃথক। ফটোশপে আপনি একটি ছবি ওপেন করবেন, তাকে পরিবর্তণ করবেন, তারপর সেভ করবেন। প্রয়োজনে আগেরটি ঠিক রেখে ভিন্ননামে সেভ করবেন। লাইটরুম তৈরী করা হয়েছে বহুসংখ্যক ছবি নিয়ে কাজ করার জন্য, এবং ধরেই নেয়া হয়েছে আপনি মুল ছবিগুলিকে অক্ষত রেখে কাজ করবেন। কাজেই কোন ইমেজ ওপেন করার আগেই আপনি কিছু বিষয় ঠিক করে নেবেন। যেমন আপনার মুল ইমেজগুলি কোথায় থাকবে, পরিবর্তন করা ইমেজগুলি কোথায় থাকবে। কখনোই আপনার মুল ইমেজের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। আপনি ইমেজ ওপেন করতে পারেন ক্যামেরার মেমোরী কার্ড থেকে অথবা হার্ডডিস্কে কপি করার পর। কিংবা ওপেন করার সময়ই আপনি সেখানে মেটাডাটা যোগ করতে পারেন।

লাইটরুম ইন্টারফেস
লাইটরুম ওপেন করলে আপনি এধরনের একটি ইন্টারফেস দেখবেন। ইন্টারফেসটি তুলনামুলক সরল, তারপরও এখানে লক্ষ্য করার মত বেশকিছু গুরুত্বপুর্ন অংশ রয়েছে।
বামদিকে অবশ্যই সফটঅয়্যারের নাম লেখা। এর ডানদিকে Library, Develop, Slideshow, Print, web লেখা মডিউল পিকার। নাম থেকেই ধারনা করা যায় এগুলির কাজ যথাক্রমে ফাইল ম্যানেজমেন্ট, ছবির পরিবর্তন, ছবিগুলির স্লাইডশো দেখা, প্রিন্ট করা এবং ইন্টারনেটে ব্যবহার করা।
আপনি যে ছবি নিয়ে কাজ করবেন সেটি দেখা যাবে মাঝখানে। একটি ছবিকে বড় করে দেখা যেতে পারে, অথবা অনেকগুলি ছবির প্রিভিউ দেখা যেতে পারে। কিভাবে দেখবেন সিলেক্ট করা যাবে ছবির নিচের অংশ থেকে। এর ডানপাশের স্লাইডার ব্যবহার করে ছবির জুম নিয়ন্ত্রন করা যাবে।
মুল স্ক্রিনের দুপাশে রয়েছে দুটি প্যানেল। সিলেক্ট করা মডিউলের ওপর নির্ভর করে এগুলি পরিবর্তিত হয়। যেমন Library সিলেক্ট করলে বামদিকে ফোল্ডার, ক্যাটালগ ইত্যাদি অপশন এবং ডানদিকে হিষ্টোগ্রাম, কুইক ডেভেলপ, মেটাডাটা ইত্যাদি অপশন পাওয়া যাবে। আর Develop সিলেক্ট করলে বামদিকে প্রিসেট, স্নাপশট ইত্যাদি অপশন, ডানদিকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের অপশন পাওয়া যাবে। যে কোন অপশনের নামের ওপর অথবা পাশের ত্রিকোনাকার চিহ্নে ক্লিক করে সেটা ওপেন করা যাবে।
একেবারে নিচের দিকে রয়েছে ফিল্মষ্ট্রিপ। ইমপোর্ট করা ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে এখানে। যে কোনটিতে ক্লিক করলে তাকে একটিভ ইমেজ হিসেবে মাঝের উইন্ডোতে পাওয়া যাবে। ফিল্মষ্ট্রিপের উইন্ডোর ডিভাইডার ব্যবহার করে বড়ছোট করে থাম্বনেইলের আকার বড়-ছোট করা যাবে।


ইমপোর্ট করা
প্রথমবার লাইটরুম চালু করলে আপনি কোন ইমেজ পাবেন না। ইমেজ ব্যবহারের জন্য আপনাকে সেগুলি ইমপোর্ট করতে হবে। এখানে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
লাইটরুমে প্রায় সবধরনের বিটম্যাপ ইমেজ, সব ধরনের র, সিএমওয়াইকে এবং নতুন ভার্শনে (৩.০) তে ভিডিও ফরম্যাট ইমপোর্ট করা যাবে।
·        ইমপোর্ট করার জন্য মডিউল সিলেক্ট করুন। এরপর বামদিকের প্যানেলের নিচের দিকে Import বাটনে ক্লিক করুন (অথবা মেনু থেকে কমান্ড দিন)। বামদিকের প্যানেলে সোর্স হিসেবে ড্রাইভ/সংযুক্ত মেমোরীকার্ড ইত্যাদি দেখা যাবে।
·        ড্রাইভ সিলেক্ট করুন। যে ফোল্ডারে ছবিগুলি রয়েছে সেটি সিলেক্ট করুন। ভেতরের ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে। অপশন ক্লিক করে সাবফোল্ডারের ইমেজগুলি ব্যবহার করতে পারেন অথবা এটি অফ করে নির্দিষ্ট একটি ফোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
·        প্রিভিউ উইন্ডোতে লক্ষ করলে প্রতিটি ইমেজের ওপরে একটি টিক চিহ্ন দেখা যাবে। কোন ছবিকে ইমপোর্ট কাজ থেকে বাদ দেয়ার জন্য সেই ছবির টিক চিহ্ন উঠিয়ে দিন। প্রয়োজনে গ্রিড ভিউ এর বদলে লুপ ভিউ ব্যবহার করে ইমেজকে বড় করে দেখে নিতে পারেন।
·        ইমপোর্ট কিভাবে করা হবে সেজন্য জন্য ৪টি অপশন রয়েছে প্রিভিউ উইন্ডোর ওপরে। Copy to DNG অপশন প্রতিটি ফাইলকে প্রথমে অন্য ফোল্ডারে কপি করবে এবং তাদেরকে DNG তে কনভার্ট করবে।  Copy সিলেক্ট করলে সবগুলিকে নতুন ফোল্ডারে কপি করবে, Move সিলেক্ট করলে সবগুলি ইমেজকে অন্য যায়গায় সরিয়ে নেবে (যেমন মেমোরীকার্ড থেকে হার্ডডিস্কে) এবং Add সিলেক্ট করলে ফোল্ডারের কোন পরিবর্তন না করে সরাসরি ইমপোর্ট করবে।
·        ডানদিকের প্যানেলটি একবার যাচাই করে নিন। Render Preview অংশে ৪টি অপশন রয়েছে। মুলত প্রিভিউ এর মান ঠিক করার জন্য এই অপশনে পরিবর্তন করবেন। ভাল মান ব্যবহার করলে বেশি সময় প্রয়োজন হবে।
·        Don’t Import Suspected Duplicates সিলেক্ট করা থাকলে একই ইমেজ দুবার ইমপোর্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাতিল করবে।
·        সবকিছু ঠিক করা হলে নিচে ডানদিকে ইমপোর্ট বাটনে ক্লিক করুন। সিলেক্ট করা ইমেজগুলি ইমপোর্ট হবে।


বেসিক এডিটিং
·        ইমপোর্ট করার পর কোন ছবি এডিট করার জন্য মডিউলে যান।
·        নিচের ফিল্মষ্ট্রিপ থেকে সেটি সিলেক্ট করুন।
·        ডানদিকে প্যানেল থেকে Basic ট্যাব ওপেন করুন। এখানে Temperature, Color, Exposure, Recovery, Fill light, Blacks, Brightness, Contrast, Clarity ইত্যাদি সবকিছু পরিবর্তন করার জন্য স্লাইডার পাওয়া যাবে। যে কোনকিছু পরিবর্তনের সাথেসাথে তার প্রিভিউ দেখা যাবে।
·        Tone Curve, HSL, Effect ইত্যাদি ট্যাব ওপেন করে সেখানে পরিবর্তন করতে পারেন। আপনি নিশ্চয়ই জানেন এখানে কি করতে হয়।


এক্সপোর্ট করা 
ছবির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার পর চুড়ান্ত ছবি পাওয়ার জন্য মেনু থেকে File - Export কমান্ড ব্যবহার করুন। এক্সপোর্ট মেনুতে ফোল্ডারের নাম বলে দেয়াসহ আউটপুট ইমেজের ফরম্যাট, সাইজ ইত্যাদি বলে দেয়া যাবে।

1 comment:

  1. ফটোগ্রাফির জন্য লাইটরুম

    তরুণদের কাছে ফটোগ্রাফি বিষয়টি জনপ্রিয়তার শীর্ষে। শখের পাশাপাশি পেশা হিসেবেও ফটোগ্রাফির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। সাধারন ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ক্যামেরা ছেড়ে হাতে উঠে আসছে DSLR (ডিজিটাল সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স) এর মত অত্যাধুনিক ক্যামেরা। ফটোগ্রাফির আছে নানান ক্যাটাগরি। কেউ ন্যাচার ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসেন, কেউ কমার্শিয়াল ফটোগ্রাফি করতে আগ্রহী। পেশা হিসেবে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি তরুণ চাহিদার তুঙ্গে। এগুলোরও অসংখ্য ধরন আছে ল্যান্ডস্কেপ, পোট্রেইট, প্রোডাক্ট, ম্যাক্রো, ফরেনসিক, ট্রাভেল, ইভেন্ট ফটোগ্রাফি ইত্যাদি।
    ফটোগ্রাফির চাহিদা ও জনপ্রিয়তা কেবল দেশের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভালো ফটোগ্রাফারের কদর রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। গুণী ফটোগ্রাফারদের ছবিগুলো বিশ্ববিখ্যাত এ্যাওয়ার্ড বয়ে আনছে। ভালো ছবি থেকে আয় করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছবি বেচাকেনাও হচ্ছে এখন।
    পেশা কিংবা শখ যে উদ্দেশ্যেই তোলা হোক ছবি হতে হবে পারফেক্ট। একটা ভালো ছবির পুরোটাই তোলার ওপর নির্ভর করে না। প্রায় অনেকাংশই নির্ভর করে প্রোপার এডিটের ওপর। প্রোপার এডিট জানা না থাকায় অনেকেই ফটোগ্রাফিতে তাদের কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছুতে পারছে না। এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অন্যদের টপকে যেতে ছবি তোলার দক্ষতার পাশাপাশি ছবি এডিটিংয়েও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে।
    মোবাইল ক্যামেরা কিংবা সাধারন ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা যেমন সহজ তেমনি সেগুলো এডিট করাও সহজ। খুব সাধারন কিছু কারেকশন ও ইফেক্ট যুক্ত করা ছাড়া ওগুলোতে আর তেমন কোন কাজ করা যায় না। এক্ষেত্রে DSLR ক্যামেরায় তোলা ছবি এডিটিং তুলনামুলক জটিল। এসব ছবিতে করার মত অনেক কাজ থাকে। যা ছবিকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দিতে পারে।
    এডিটের কথা বলতে গেলে একটু পেছনের দিকে তাকাতে হয়। একটা সময় ছিল যখন ছবি এডিট থেকে ডেভেলপের সমস্ত কাজ করতে হত ডার্ক রুমে। একটি অন্ধকার ঘরে, অনেক সাবধানে, সময় নিয়ে ছবির খুঁটিনাটি সংশোধন করা হত। সামান্য অসাবধানতায় অনেক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতো। সময়ের সাথে সাথে এই ধারার পরিবর্তন এসেছে। তোলা ছবির পূর্ণাঙ্গ এডিটিং এখন সফটওয়্যারেই সম্ভব।
    ছবি এডিটিঙের সফটওয়্যার হিসেবে ফটোশপের কথাই সবাই সাধারনভাবে জানে। কিন্তু ফটোশপ মূলত গ্রাফিক্স ডিজাইন সংক্রান্ত কাজের জন্যই বেশি উপযোগী। ক্যামেরায় তোলা ছবির এডিটিংয়ের জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার হল ‘লাইটরুম’। এটা ফটোগ্রাফারদের অত্যাবশ্যকীয় সফটওয়্যার। পেশাদার ফটোগ্রাফিতে বর্তমানে এই সফটওয়্যারের উপযোগিতা সবচেয়ে বেশি। ছবির কালার, এক্সপোজার কারেকশনের মত বেসিক থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মানের এডিটিং এই সফটওয়্যার দিয়ে করা হয়।
    বর্তমান তরুণ প্রজন্মের ফটোগ্রাফিক চাহিদার কথা মাথায় রেখে ‘লাইটরুম’ নিয়ে টিউটোরিয়াল তৈরি করেছেন ইমরান হোসাইন হিমেল। এখানে এ্যাডব লাইটরুমের ব্যবহার এ টু জেড দেখানো হয়েছে। ব্যবহারকারিদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো সংযুক্ত করা আছে। বাংলাদেশে, বাংলা ভাষায় এটিই লাইটরুমের প্রথম ও একমাত্র টিউটোরিয়াল।

    টিউটোরিয়ালটি সংগ্রহ করা যাবে রকমারি ডট কম থেকে।
    টিউটোরিয়ালটি সংগ্রহ করতে Product Link: https://www.rokomari.com/book/127658/ ফোন- ১৬২৯৭ অথবা ০১৫ ১৯৫২ ১৯৭১, ০১৮৪ ১১৫ ১১৫ ।

    লাইটরুম এর এই টিউটোরিয়াল দিয়ে আপনি ঘরে বসেই শিখতে পারবেন। প্যকেজটিতে টিউটোরিয়াল ছাড়াও রয়েছে সফটয়্যার, মেটেরিয়ালসহ 100+ RAW Photograph NEF, CR2 ইত্যাদি।

    Teaser Link: https://www.youtube.com/watch?v=E_gY1Be2TuU
    Product Link: https://www.rokomari.com/book/127658/
    #Photography
    #Lightroom

    ReplyDelete