Friday, March 21, 2014

HDR Photography

ডিজিটাল ক্যামেরার অনেক উন্নতি হয়েছে, ক্রমাগত হচ্ছে এবং মানুষ ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে মানুষ সন্তুষ্ট। তারপরও বাস্তব সত্য হচ্ছে মানুষ চোখে যেমন দেখে ঠিক সেটাই ছবিতে পাওয়া যায় না। কারন আলো এবং অন্ধকারের বিভিন্ন পর্যায় ছবিতে রেকর্ড করা যায় না। সেইসাথে দুরত্বে বিষয় আছে। একই সময়ে কাছের এবং দুরের বস্তুকে সঠিকভাবে দেখানোর ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। একদিকে প্রাধান্য দিলে আরেক দিককে অবহেলা করতে হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল যে ব্যবস্থা তা হচ্ছে হাই ডাইনামিক রেঞ্জ (এইচডিআর)।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে ডাইনামিক রেঞ্জ বিষয়টি আসলে কি ?
এর নির্ভুল উত্তর নেই। ক্যামেরা নির্মাতা কখনো বলে না ক্যামেরার ডায়নামিক রেঞ্জ কত। অন্যভাবে বললে আলোছায়ার মধ্যে কতদুর পর্যন্ত পার্থক্য রেকর্ড হবে সেটা পরিমাপগতভাবে জানানো হয় না। কাজেই বস্তুত এর কোন সংজ্ঞা নেই। সহজভাবে ধারনা হচ্ছে, প্রতিটি ক্যামেরা আলো এবং ছায়ার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমান লেভেল ধারন করতে পারে। এটাই ডাইনামিক রেঞ্জ। কাজেই যখন বলা হয় হাই ডাইনামিক রেঞ্জ তখন এই মানকে আরো বৃদ্ধি করা বুঝায়।
অন্যভাবে বললে, ভাল ছবির জন্য প্রয়োজন সঠিক এক্সপোজার। সাধারনভাবে সঠিক এক্সপোজারে যে তথ্য রেকর্ড হয় এইচডিআর তারথেকে কয়েকগুন বেশি তথ্য রেকর্ড করে। একই সময়ে কাছের এবং দুরের বস্তুর জন্য পৃথক এক্সপোজার ব্যবহার করে। ফলে ছবি পাওয়া যায় স্পষ্ট।
কথা হচ্ছে আপনি এইচডিআর ফটোগ্রাফ পাবেন কিভাবে ?
দুভাবে পেতে পারেন। সবচেয়ে ভাল ফল পাবেন ছবি উঠানোর সময় বিশেষ নিয়মে ছবি উঠিয়ে। ছবি উঠানোর পর ফটোশপ বা লাইটরুম ব্যবহার করে এইচডিআর ব্যবহার করতে পারেন। এই সফটঅয়্যারগুলিতে সাধারনভাবে আলো কমবেশি করা ছাড়াও নির্দিষ্টভাবে আলো বা ছায়ার অংশ পরিবর্তন করা যায়। এজন্য এই সাইটেই ফটোশপ টিউটোরিয়াল দেখুন।
ক্যামেরা ব্যবহার করে এইচডিআর ছবি কিভাবে উঠাবেন জেনে নিন। আগেই বলে নেয়া ভাল এইচডিআর ফটোগ্রাফি ভাল কাজ করে আউটডোরে। প্রাকৃতিক দৃশ্য উঠানোর সময়।
.          ক্যামেরাকে ট্রাইপডে রাখুন।
.          ম্যানুয়েল মোডে যান। এপারচার নির্দিষ্ট করুন।
.          ফোকাস করুন এবং এক্সপোজার কন্ট্রোল পরিবর্তন করে বিভিন্ন সেটিংএ অন্তত ৫টি ছবি তুলুন। ছবিগুলির পার্থক্য শুধুমাত্র এক্সপোজারে, অন্যকিছুতে পরিবর্তন করবেন না।
.          ছবিগুলিকে এইচডিআর সফটঅয়্যারে ব্যবহার করে একসাথে করুন। ফটোশপ, লাইটরুম ছাড়াও বহু সফটঅয়্যার আছে যেখানে একাজ করা যায়।
মনে হচ্ছে কাজটি বেশ কঠিন। কিন্তু চোখে পড়ার মত উচুমানের ছবি পেতে হলে অতিরিক্ত কাজ তো করতেই হয়।

ক্যানন এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার

বাংলা-টিউটর সাইটে ফটোগ্রাফি সম্পর্কে যাকিছু উল্লেখ করা হয়েছে সব যায়গায় নাইকন ক্যামেরার উল্লেখ করা হয়েছে। একটা কারন হতে পারে সেটা ব্যক্তিগতভাবে পছন্দের। আরেক জনপ্রিয় ব্রান্ড ক্যানন যারা ব্যবহার করেন তারা কিছুটা অস্বাচ্ছন্দবোধ করতে পারেন তাদের ক্যামেরা ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়নি দেখে।
এখানে ক্যানন এসএলআর ক্যামেরার ব্যবহারের পদ্ধতি উল্লেখ করা হচ্ছে। ক্যামেরা মডেল হিসেবে জনপ্রিয় ইওস টি২আই (৫৫০ডি) বেছে নেয়া হয়েছে।
ক্যামেরা পরিচিতি
ক্যানন এবং নাইকন ক্যামেরার সামনের দিকে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। ওপরদিকে পার্থক্যের মধ্যে রয়েছে পাওয়ার সুইচ এবং মেইন ডায়াল, মোড ডায়াল এগুলির অবস্থানে। ব্যবহারের দিক থেকে সত্যিকারের পার্থক্য পেছন দিকে। বাটনগুলি ভিন্ন যায়গায় এবং ভিন্নভাবে সাজানো। আপনি নিশ্চয়ই ছবি দেখে জেনে নিতে পারেন কোটির অবস্থান কি।
কার্ড ছাড়া ছবি উঠানো
ক্যামেরায় যদি মেমোরী কার্ড না থাকে তাহলে সাটার রিলিজ বাটন কাজ করবে না। ক্যামেরার সবকিছু ঠিক আছে কিনা যাচাই করার জন্য মেমোরী কার্ড ছাড়াই ছবি উঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ছবির প্রিভিউ দেখা যাবে, শুধু সেভ হবে না। ফল হিসেবে যা হয়, আপনার ক্যামেরায় কার্ড নেই অথচ আপনি ছবি উঠিয়ে যাচ্ছেন।
মেমোরী কার্ড না থাকলে ছবি উঠানো যাবে না নিশ্চিত করে নিন।
.          ক্যামেরা অন করুন।
.          পিছনদিকে মেনু বাটনে চাপ দিয়ে মেনু অন করুন।
.          মেনু ডায়াল ব্যবহার করে বামদিকের মেনু ট্যাব সিলেক্ট করুন। মেনুতে নিচের দিকে Release shutter without card সিলেক্ট করুন।
.          পরের মেনুতে Disable অপশন সিলেক্ট করুন।
.          মেনু বাটনে চাপ দিন।
এরফলে কেবলমাত্র কার্ড থাকলেই সাটার রিলিজ বাটন কাজ করবে।

ছবির মান ঠিক করুন
ইচ্ছে করলে আপনি সেন্সরের পুরো রেজ্যুলুশনে ছবি উঠাতে পারেন (অধিকাংশ সবয় সেটা করবেন), অথবা ছবির রেজ্যুলুশন কমিয়ে ছবি উঠাতে পারেন। রেজ্যুলুশন কমানোর একটাই সুবিধে, এতে ফাইলসাইজ ছোট হয়, ফলে অল্প যায়গার কার্ডে বেশি ছবি উঠানো যায়। ক্যাননে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন রেজ্যুলুশনে ছবি উঠানো যায়।
.          পিছনদিকে মেনু বাটনে চাপ দিন।
.          মেইন ডায়াল ব্যবহার করে একেবারে বামদিকের মেনু ট্যাব সিলেক্ট করুন।
.          মেনুতে Quality অপশন বের করুন।
.          সেট বাটনে চাপ দিন।
.          যে সেটিং ব্যবহার করতে চান সেটা সিলেক্ট করুন।

অটো-আইএসও বন্ধ করুন
আলো কম থাকলে আইএসও এর মান নিজে থেকেই বেড়ে যায়, ফল হিসেবে পাওয়া যায় নয়েজযুক্ত ছবি। আপনি অটো আইএসও পরিবর্তণ বন্ধ করে নিজের পছন্দমত আইএসও ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জল আলোর জন্য এর মান ১০০ থেকে ২০০ এর মধ্যে রাখা হয়, ঘরের মধ্যে বা মেঘলা দিনে ৪০০ পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। আপনার কাজ আইএসও যতটা কম রেখে গ্রহনযোগ্য ছবি উঠানো যায়। কখনো কখনো কম আলোর ছবি উঠিয়ে পরবর্তীতে সফটঅয়্যার ব্যবহার করে সেটা ঠিক করে নিতে পারেন, নয়েজ দুর করার বিষয়টি তারচেয়ে জটিল।
.          ক্যামেরা চালু অবস্থায় ওপরের দিকে আইএসও বাটনে চাপ দিন।
.          মেইন ডায়াল ব্যবহার করে পছন্দের আইএসও সিলেক্ট করুন।
.          আরেকবার আইএসও বাটনে চাপ দিন। পরিবর্তন না করা পর্যন্ত পছন্দের আইএসও ব্যবহৃত হবে।

হোয়াইট ব্যালেন্স সেট করা
একে ধরনের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য একেরকম। এর প্রভাব পড়ে সাদা রঙের ওপর। একারনেই কোন ছবি লালচে, কোনটি নিলচে দেখায়। ছবি উঠানোর সময় সকাল, দুপুর, মেঘলা, ফ্লরোসেন্ট বাতি, টাংষ্টেন বাতি, ফ্লাশ ইত্যাদি অনুযায়ী সাদা রঙ কেমন দেখা যাবে ঠিক করে নিতে হয়। একে বলা হয় হোয়াইট ব্যালান্স।
.          অটো মোডে হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করা যায় না। ক্যামেরাকে ক্রিয়েটিভ মোডে নিন (যেমন P)
.          ক্যামেরার পিছনদিকে WB লেখা বাটনে চাপ দিন।
.          এরো কি ব্যবহার করে আলোর সাথে মিল রেখে সঠিক সেটিং সিলেক্ট করুন।
.          সেট বাটনে চাপ দিন।

ভিউফাইন্ডার ডাইঅপ্টার এডজাষ্ট করা
ভিউফাইন্ডার ব্যবহারের সময় সামনের দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না ? এর নিজস্ব ফোকাসের ব্যবস্থা রয়েছে যা পরিবর্তন করে ঠিক করে নেয়া যায়।
.          ক্যামেরার সামনে কিছু ফোকাস করুন।
.          ভিউফাইন্ডারে সাথে নব ব্যবহার করে ফোকাস স্পষ্ট করুন।

অটোফোকাস/ষ্ট্যাবিলাইজার অন/অফ করা
আপনি হয়ত ফোকাস রিং ব্যবহার করে ফোকাস করতে চান। যেমন আপনার সামনে একটি গাছের পাতা এবং দুরে আরেকটি ফুল রয়েছে, আপনি চান পছন্দমত এর যেকোন একটিকে ফোকাস করতে।  অটোফোকাস অফ করে নিন।
কিংবা ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন অফ রাখতে চান ক্যামেরাকে ট্রাইপডে ব্যবহারের সময়
.          লেন্সের গায়ে AF/MF সুইট ব্যবহার করে অটোফোকাস অন/অফ করুন।
.          লেন্সের গায়ে Stabilizer On/OFF লেখা সুইচ ব্যবহার করে ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন/অফ করুন।

সাধারনভাবে এই কন্ট্রোলগুলি ব্যবহার করে আপনি ক্যানন এসএলআর ক্যামেরায় ভাল ছবি উঠাতে পারেন। অবশ্য ভাল ছবির ধারনা একে জনের কাছে একেক রকম। এবিষয়ে আগামী টিউটোরিয়ালে।

ডিজিটাল ক্যামেরা কিংবা মোবাইল ফোনে ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা

ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি ডিভাইসে কম্পিউটারের মত ফার্মঅয়্যার নামে সফটঅয়্যার থাকে। এর কাজ হচ্ছে ডিভাইসের বিভিন্ন অংশকে হার্ডঅয়্যার লেভেলে নির্দেশ দেয়া। ক্যামেরাকে উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করলে, কিভাবে রং ঠিক করা হবে, কিভাবে জেপেগ কনভার্শনের কাজ হবে, কিভাবে নয়েজ রিডাকশনের কাজ হবে এই নির্দেশগুলি দেয়া থাকে এতে। স্বাভাবিকভাবেই একবারে নিখুতভাবে সবকিছু হবে এটা আশা করা যায় না। সেকারনে কোন ত্রুটি ধরা পড়লে বা কিছু উন্নতি করা হলে তাকে আপডেট সফটঅয়্যার হিসেবে দেয়া হয়। ব্যবহারকারী নিজেই সেটা ইনষ্টল করে নিতে পারেন।
উদাহরন হিসেবে এখানে নাইকন ডি-৩১০০ ক্যামেরা উল্লেখ করা হচ্ছে। অন্য ক্যামেরা বা মোবাইল ফোন বা অন্য ডিভাইসের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন।
বর্তমান ফার্মঅয়্যার ভার্শন সম্পর্কে জানুন
.          মেনু বাটনে চাপ দিন।
.          মাল্টি সিলেক্টর বাটন ব্যবহার করে Firmware version লেখা অংশে যান এবং OK চাপ দিন। বর্তমান ভার্শনের নাম (সংখ্যা) জানা যাবে।
.          ভার্শন এর মান লিখে রাখুন।
কিভাবে আপডেট করবেন
.          নির্মাতার (উদাহরনে নাইকন, আপনার ক্ষেত্রে ক্যানন বা নোকিয়া হতে পারে) সাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট মডেলের জন্য সবশেষ ফার্মঅয়্যার ডাউনলোড করুন।
.          একে জিপ করা অপস্থায় পেতে পারেন। আনজিপ করে নিন। ক্যামেরার কার্ডটি ফরম্যাট করে নিন, এরপর ফাইল সেখানে কপি করুন। অবশ্যই রুটে কপি করবেন, ফোল্ডারের মধ্যে থাকা ফাইল ব্যবহার করা যাবে না।
.          ক্যামেরার পুরো চার্জ আছে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন। কার্ডটি ঢুকিয়ে ক্যামেরা অন করুন।
.          মেনু বাটনে চাপ দিয়ে ফার্মঅয়্যার মেনুতে যান। আপডেট স্ক্রিনে ইয়েস সিলেক্ট করে ওকে চাপ দিন।
.          একটি ওয়ার্নিং মেসেজ দেখা যাবে। আপডেট হতে কয়েক মিনিট (২ থেকে ৫ মিনিট) সময় নিতে পারে। এই সময় কামেরায় কিছু করবেন না।
.          কাজ শেষ হলে মেসেজটি চলে যাবে। ক্যামেরা অফ করুন এবং কার্ডটি খুলে ফেলুন।
.          ক্যামেরা আবার চালু করুন। নতুন ফার্মঅয়্যারে ক্যামেরা কাজ করার কথা। আগের পদ্ধতিতে ফার্মঅয়্যার ভার্শন চেক করে নিন।
নতুন ফার্মঅয়্যার পাওয়া যায় নির্মাতার ওয়েবসাইট থেকে। নিয়মিতভাবে তাদের সাইটে আপডেট বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।

ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন

আধুনিক ক্যামেরাগুলির জন্য ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন একটি প্রচলিত শব্দ। বলা হয় ভাল, স্পষ্ট ছবি উঠানোর সুযোগ করে দেয় এই ব্যবস্থা। ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশনের বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনি যখন ছবি উঠান, যতক্ষন লেন্সের ঢাকনা খোলা থাকে ততক্ষন সেন্সরে আলো আসতে থাকে। এইসময় যদি আপনার হাত কাপে তাহলে সামনের দৃশ্য একই যায়গায় থাকার বদলে কিছুটা ছড়িয়ে যায়। ফল হিসেবে ছবি পাওয়া যায় ঝাপসা। সাটার স্পিড যত কম এই ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। আবার দুরের ছবি যখন উঠানো হয় তখন সামান্য নড়াচড়াও বড় দুরত্ব অতিক্রম করে, সেখানেও ছবি ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই সমস্যার সমাধান দেয় ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন।
মুলত এতে যে কাজ হয়, ক্যামেরার এই প্রযুক্তি ক্যামেরার নড়াচড়া হিসেব করে। ক্যামেরা নড়ার সাথেসাথে বাইরে থেকে আলো গ্রহন বন্ধ করে দেয়। ফলে পরিবর্তিত যায়গার দৃশ্য ধরা পড়ে না, পাওয়া যায় স্পষ্ট ছবি।
ক্যামেরা কিভাবে একাজ করে সেটা কারিগরী বিষয়। হয়ত তার বিস্তারিত না জানলেও চলে।
ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কোন ক্যামেরায় লেন্সে এই প্রযুক্তি যোগ করে দেয়া হয়, কোন ক্যামেরায় ক্যামেরার প্রসেসর এই কাজ করে, কোন ক্যামেরা দুধরনের ব্যবস্থাই থাকে। মুল দুটি ভাগ হচ্ছে অপটিক্যাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন এবং ডিজিটাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন। অপটিক্যাল পদ্ধতিতে ছবির মান ভাল থাকে।
ষ্ট্যাবিলাইজড লেন্সে এই ব্যবস্থা অন-অফ করার জন্য একটি সুইচ থাকে। ব্যবহার খুব সহজ। ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহারের জন্য সুইচটি অন করুন, ব্যবহার না করলে অফ রাখুন।
মনে হতে পারে অফ করার বিষয়টি আসছে কেন ? সবসময় অন রাখলে সমস্যা কোথায় ?
আপনি যখন ট্রাইপড ব্যবহার করেন তখন যদি ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন থাকে, ক্যামেরা ধরে নেয় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করতে হবে। ফলে স্থির ছবিকে ষ্ট্যাবিলাইজ করার চেষ্টা করে। এতে ভালোর পরিবর্তে মন্দ ফল পাওয়া যায়।
কম্প্যাক্ট ক্যামেরার ক্ষেত্রে ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন-অফ করার কাজ করতে হয় মেনু থেকে।
এতক্ষন পর্যন্ত ষ্ট্যাবিলাইজেশন শব্দটি ব্যবহার করা হলেও একে ক্যামেরা নির্মাতা এরজন্য একেক নাম ব্যবহার করে। নাইকন (নিকন) বলে ভাইব্রেশন রিডাকশন (ভিআর), ক্যানন বলে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন (আইএস), ট্যামরন বলে ভাইব্রেশন কন্ট্রোল (ভিসি) ইত্যাদি।
অল্প কথায় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহারের সাধারন নিয়ম;
.          ট্রাইপড ব্যবহারের সময় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করবেন না। অন্য সবসময় ব্যবহার করুন।
.          এসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে ক্যামেরা অফ করার আগে ষ্ট্যাবিলাইজেশন সুইচ অফ করে নিন।  
.          ক্যামেরা বা লেন্স কেনার সময় ষ্ট্যাবিলাইজেশন আছে কিনা দেখে কিনুন (অবশ্যই ষ্ট্যাবিলাইজেশনসহ লেন্সের দাম বেশি)।
.          ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবস্থা না থাকলে ট্রাইপড ব্যবহার করুন অথবা যতটা সম্ভব হাত স্থির রাখার চেষ্টা করুন।
.          ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করে সাধারনত সাধারন সাটারস্পিডের দ্বিগুন সাটার স্পিড ব্যবহার করা যায়। অল্প আলোয় ছবি উঠানোর সময় একে কাজে লাগান।

ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার ৩, মিটারিং মোড

ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের মুল কারন আপনি উচু মানের ছবি চান। ক্যামেরা তাক করবেন আর ক্লিক করে ছবি উঠাবেন এতে সন্তুষ্ট নন। ভাল ছবির জন্য আপনাকে দৃষ্টি রাখতে হয় ছবির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দিকেই। ফটোগ্রাফির মুল শব্দ হচ্ছে ফটো বা লাইট। একে একেবারে নিখুতভাবে ব্যবহার করার ওপর নির্ভর করে ছবি ভালমন্দ।
সব ক্যামেরাতেই মিটারিং বলে একটি ব্যবস্থা রয়েছে। সামনে যে আলো আছে তারজন্য কত এপারচার ব্যবহার করবেন, কত সাটার স্পিড ব্যবহার করবেন এটা ক্যামেরা নিজেই হিসেব করে বলে দিতে পারে। আপনি একটিকে নির্দিষ্ট করে দিলে তারসাথে মানানসই আরেকটি কত হবে সেটা নিয়েও ভাবতে হয় না।  এর বাইরেও আরো নিখুতভাবে আলো ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে এসএলআর ক্যামেরায়।
এখানে নাইকন ডি-৯০ ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে উদাহরন হিসেবে। নাইকনের অন্যান্য এসএলআর ক্যামেরা সরাসরি একইভাবে ব্যবহার করা যাবে, এছাড়া অন্য ব্রান্ডের ক্যামেরায় বাটন-পদ্ধতির কিছু ভিন্নতা থাকলেও মুল বিষয় একই।
মিটারিং মোড
আপনি এক্সপোজার পরিমাপের জন্য সামনে দৃশ্য ব্যবহার করবেন। কিন্তু কতটা অংশ। যেখানে এক যায়গায় আলো বেশি, আরেক যায়গায় কম। একটি পাখির ছবি উঠানোর সময় আপনি তার মাথাকেই মুল ধরে ছবি উঠানো পছন্দ করবেন, কিন্তু বাগানের ছবি উঠানোর সময় আলোছায়া সম্বলিত বেশ কিছুটা যায়গা বিবেচনায় আনতে চান।
ডি-৯০ মিটারিং মোড ৩ ধরনের। ম্যাট্রিক্স, সেন্টার ওয়েটেড এবং স্পট।
ম্যাট্রিক্স মিটারিং : এটাই সাধারনভাবে ব্যবহৃত হয়। সামনের দৃশ্য থেকে আলো ক্যামেরার সেন্সরে প্রবেশ করে এবং সেখানে ডাটাবেজের লক্ষ লক্ষ প্যাটার্নের সাথে মিলিয়ে সঠিক মান বের করে।
সেন্টার ওয়েটেড মিটারিং : পুরো দৃশ্য বিবেচনায় আনা হবে, কিন্তু বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে কেন্দ্রের মুলত ৮ মিমি এলাকাকে।
স্পট মিটারিং : কেন্দ্রের ৩.৫ মিমি এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে হিসেব করা হবে।
মিটারিং মোড পরিবর্তন
.          ক্যামেরা অন থাকা অবস্থায় মিটারিং বাটন চেপে ধরুন (সাটার রিলিজ বাটনের পাশে)।
.          কমান্ড ডায়াল ঘুরিয়ে সঠিক মোড সিলেক্ট করুন।
সেটিং দেখার জন্য ওপরের ডিসপ্লে ব্যবহার করতে পারেন অথবা এলসিডি অন করে নিতে পারেন।
ছবির বিষয় অনুযায়ী সঠিক মিটারিং মোড ব্যবহার করুন, ভাল ছবি উঠান

ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার : ১

যারা পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা ব্যবহারে অভ্যস্থ তারা সাধারনত এসএলআর ক্যামেরাকে কিছুটা ভীতির চোখে দেখেন। ভাবেন সেটার ব্যবহার হয়ত জটিল। বাস্তবে এসএলআর ক্যামেরাকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরার মতই। উন্নত ক্যামেরার কারনে পাবেন ভাল মানের ছবি। সেইসাথে সামান্য কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখলে দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে উচুমানের ছবি পাবেন।
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের সাধারন নিয়মগুলি এখানে শেখানো হচ্ছে। উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নাইকন ডি-৯০, তবে যে কোন এসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম প্রযোজ্য।
প্রথমে ক্যামেরার অংশগুলি একবার দেখে নেয়া যাক।
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরার প্রধান বৈশিষ্ট এতে এলসিডি ডিসপ্লে ছাড়াও রয়েছে অপটিকাল ভিউফাইন্ডার। এর মাধ্যমে আপনি যা দেখতে পান সেটা দেখা যায় লেন্সের ভেতর দিয়ে। একটি আয়নার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়ে ভিউফাইন্ডারের মাধ্যমে দেখা যায়। সেকারনেই নাম এসএলআর (সিংগেল লেন্স রিফ্লেক্ট)। অন্যদিকে পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরায় যে ইলেকট্রনিক ভিউফাইন্ডার থাকে সেটা লেন্সের ভেতর দিয়ে আসে না, সেটা পৃথকভাবে দেখার ব্যবস্থা। দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়।
লেন্সের ভেতর দিয়ে দেখার সুবিধে হচ্ছে একেবারে নিখুত দৃশ্য দেখার সুযোগ। ক্যামেরার নির্মাতা বলেন এলসিডি ডিসপ্লে ব্যবহার যদিও কখনো কখনো সুবিধেজনক (বিশেষ করে ভিডিও করার সময়) তাহলেও সেটা শতভাগ নিখুত না, ভিউফাইন্ডার নিখুত। কাজেই এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনি ভিউফাইন্ডার ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক।
দ্বিতীয় পার্থক্য হচ্ছে মেইন কন্ট্রোল ডায়াল এবং কন্ট্রোল সাব-ডায়াল। সাটার রিলিজ বাটনের সামনে এবং ক্যামেরার পেছনে যে দুটি হুইল রয়েছে এই দুটি। এপারচার, সাটারস্পিড সহ যে কোন পরিবর্তনের জন্য এদুটি ঘুরাতে হয়। এদের অবস্থান এমনই যে সাটার রিলিজ বাটনের ওপর একটি আঙুল রেখে সহজে ঘুরানো যায়।
তৃতীয় বড় পার্থক্য হচ্ছে জুম রিং। লেন্সের বিশেষ অংশ ঘুরালে জুম কমবেশি হয়। ফলে খুব দ্রুত জুম পরিবর্তন করা যায়। এছাড়া একই পদ্ধতিতে ঘুরিয়ে ফোকাস করার জন্য রয়েছে ফোকাস রিং। ম্যানুয়েল ফোকাস করার সময় এটা ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহার পদ্ধতি
আপনি ক্যামেরাকে একেবারে পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরার মত ব্যবহার করতে চান। এজন্য রয়েছে অটোমোড। মোড ডায়ালে সবুজ রঙের চিহ্নকে ঘুরিয়ে পয়েন্টারের কাছে আনুন। এখন যার ছবি উঠাতে চান সেদিকে ক্যামেরা তাক করুন। সাটার রিলিজ বাটন অর্ধেক নামিয়ে আনুন, ফোকাস হবে। পুরো চাপ দিন ছবি উঠবে। যদি আলো কম থাকে ফ্লাশ নিজে থেকেই খুলে যাবে এবং জ্বলবে।
মুহুর্তেই আপনি বুঝে যাবে সাধারন ক্যামেরা থেকে এসএলআর এর পার্থক্য কোথায়। এতে ফোকাস হবে খুব দ্রুত, উড়ে যাওয়া পাখিকেও ফোকাস করে ছবি উঠানো সম্ভব।

বিভিন্ন মোড ব্যবহার
আপনি কখনো সামনে দাড়ানো মানুষের ছবি উঠাবেন (পোর্ট্রেট) কখনো খোলা মাঠ-আকাশের ছবি উঠাবেন (ল্যান্ডস্কেপ) কখনো কাছ থেকে ফুলের ছবি উঠাবেন (ক্লেজআপ)।
ছবি উঠানোর আগে মোড ডায়াল ঘুরিয়ে কখনো মুখের ছবি, কখনো পাহাড়ের ছবি, কখনো ফুলের ছবি দেখে নির্দিস্ট মোড ব্যবহার করুন। ক্যামেরা নিজেই সঠিক এপারচার, সাটারস্পিড ইত্যাদি ঠিক করে নেবে।
কাজেই ব্যবহারের দিক থেকে এপর্যন্ত কম্প্যাক্ট ক্যামেরা থেকে এসএলআর ক্যামেরার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

এপারচার এবং সাটারস্পিড মোড
দক্ষ ফটোগ্রাফাররা এই দুটি মোড ব্যবহার করেন সবচেয়ে বেশি। এপারচার প্রায়োরিটি মোডে তিনি এপারচার কত হবে ঠিক করে দেন (এপারচার পরিবর্তন করলে কিকি পরিবর্তন হয় সেকথা জানানো হয়েছে অন্য টিউটোরিয়ালে)। তারসাথে মিল রেখে সঠিক সাটারস্পিড ঠিক করে নেয় ক্যামেরা।
বিপরীতভাবে সাটার স্পিড মোডে আপনি সাটার স্পিড ঠিক করে দেবেন, ক্যামেরা নিজেই তারসাথে মানানসই এপারচার ঠিক করে নেবে।
আপনার দায়িত্ব আপনি কোন মোড ব্যবহার করবেন সেটা ঠিক করা। আকাশে উড়তে থাকা পাখির স্পষ্ট ছবি কিংবা দ্রুত গতিশীল কিছুকে স্থির দেখানোর জন্য আপনার বেশি সাটার স্পিড প্রয়োজন, কাজেই আপনি সাটারস্পিড নিজে ঠিক করে দেবেন।
আবারও, কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন সে সম্পর্কে অন্য টিউটোরিয়ালে লেখা হয়েছে।
এপারচার প্রায়োরিটি মোডে ছবি উঠানোর জন্য মোড ডায়াল ঘুরিয়ে এপারচার মোড (A) সিলেক্ট করুন। ফোকাস করুন। ভিউফাইন্ডার (অথবা ডিসপ্লে) বর্তমানের এপারচার সেটিং দেখাবে। সেটা পরিবর্তনের জন্য সামনের দিকের কমান্ড ডায়াল ঘুরান। একদিকে ঘুরালে এপারচার বাড়বে, বিপরীত দিকে ঘুরালে এপারচার কমবে। পছন্দমত এপারচার সেট করার পর ছবি উঠান।
সাটারস্পিড মোডে ছবি উঠানোর জন্য সাটার স্পিড মোড (S) সিলেক্ট করুন, ফোকাস করুন, পেছনের দিকের কমান্ড ডায়াল ঘুরিয়ে সাটার স্পিড পরিবর্তন করুন এবং ছবি উঠান।

ম্যানুয়েল মোড
ম্যানুয়েল মোড হচ্ছে যেখানে আপনি এপারচার এবং সাটার স্পিড দুটিই নিজে ঠিক করে দেবেন। অর্থাত আপনি জানেন এপারচার এবং সাটারস্পিড কত রাখলে ভাল ছবি পাওয়া যাবে।
ম্যানুয়েল মোড (M) সিলেক্ট করুন, আগের পদ্ধতিতে সামনের এবং পেছনের ডায়াল ব্যবহার করে এপারচার এবং সাটার স্পিড পরিবর্তন করুন। ছবি উঠান।
 
এটুকু জেনে আপনি দক্ষতার সাথে এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ক্যামেরা মডেলের সাথে এই ক্যামেরার (নাইকন ডি-৯০) পার্থক্য থাকলে ক্যামেরার ম্যানুয়েল থেকে পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নিন।

ফটোগ্রাফি থেকে আয় করুন

ছবি উঠানো আপনার শখ। আপনি মনে করেন আপনি ভাল ছবি উঠাতে পারেন। অনেক উঠিয়েছেন। এখন সেগুলি থেকে অর্থ উপার্জন করতে চান।
সম্ভব। আপনার ছবি যাদের পছন্দ তারা অর্থ ব্যয়ে কিনে নিতে পারে। নির্দিষ্ট কোন কাজে তারা সেটা ব্যবহার করবে, তারপরও আপনার ছবি আপনারই থেকে যাবে। বিক্রি করতে পারেন আরেকজনের কাছে।
ছবি বিক্রির জন্য ক্রেতাকে ছবি দেখানো প্রয়োজন। আর একাজের জন্য সবচেয়ে উপযোগি ব্যবস্থা হচ্ছে ইন্টারনেট। অনলাইনে আপনার ছবির একটি গ্যালারী তৈরী করুন, সেখানে ছবিগুলি রাখুন, কোনটির দাম কত লিখে রাখুন। অনলাইনে ক্লিক করে কেনার ব্যবস্থা রাখুন। যার পছন্দ হবে তিনি ক্লিক করবেন, টাকা দেবেন এবং ছবিটি ডাউনলোড করে নেবেন।
বুঝতেই পারছেন, যদি নিজেই নিজের গ্যালারী পরিচালনা করতে চান তাহলে আপনাকে বেশকিছু কাজ করতে হবে। একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে, সেটা আকর্ষনীয় করতে হবে, সেখানে ভিজিটর আসার ব্যবস্থা করতে হবে, কেউ কিনলে সেই অর্থ গ্রহনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা রাখতে হবে ওয়েবসাইটেই। এই ব্যবস্থায় নিজে বিক্রি করলে লাভ সবচেয়ে বেশি, তারপরও পুরো কাজটি বেশ জটিল।
এজন্য যারা আগে থেকে কাজ করছেন তাদের সাহায্য নিতে পারেন। বহু অনলাইন গ্যালারী রয়েছে যারা এধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাদের সহযোগিতা পাবার জন্য যা করতে হয় তা হচ্ছে, ফি দিয়ে সদস্য হওয়া। কেউ কেউ প্রাথমিকভাবে বিনামুল্যে কিছুদিন ব্যবহারের সুযোগ দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনাকে অর্থব্যয় করতেই হবে। এটাই তাদের ব্যবসা।
বিনিময়ে আপনি যা পাবেন তা হচ্ছে,
১. সহজে আপনার প্রোফাইল তৈরীর সুযোগ। শুধুমাত্র ক্লিক করেই আপনার প্রোফাইল মনের মত সাজিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবেন। সেখানে যথেষ্ট পরিমান নিরাপদ যায়গা।
২. ভিজিটর নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে সাইটে ভিজিটর আনার ব্যবস্থা করেন।
৩. অটোমেটেড বিক্রির পদ্ধতি। অর্থ লেনদেনের পদ্ধতি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। কেউ কিনলে সাথেসাথে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে।
৪. তাদের কাছে সবসময়ই নানাধরনের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ।
৫. অন্য ফটোগ্রাফারদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ। বিশ্বের সেরা ফটোগ্রাফাররা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তাদের সাথে একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় মত আদান-প্রদান করে ফটোগ্রাফিতে আরো উন্নতি করার সুযোগ পাবেন।
একাজের জন্য আপনার যা প্রয়োজন তা হচ্ছে একটি ভাল ক্যামেরা এবং ভাল ফটোগ্রাফার হওয়া। ক্যামেরা যত ভাল ছবির মান তত ভাল হওয়ার সম্ভাবনা। বিক্রির জন্য ছবি উঠাতে হলে এসএলআর এর নিচে ভাববেন না। নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, ইন্টারনেটে কোটি কোটি ছবি পাওয়া যায় বিনামুল্যে। অর্থের বিনিময়ে ছবি বিক্রির জন্য অবশ্যই সেই ছবিকে তাদের থেকে ভাল হতে হবে।
আর ভাল ছবি উঠানোর বিষয়টি ব্যক্তিগত আগ্রহের বিষয়। বিশ্বে বহু ফটোগ্রাফার ছবি উঠানোর জন্য মরুভুমি-বরফ-সমুদ্র-জঙ্গল সব যায়গায় ঘুরে বেড়ান।

ইন্টারনেটে সার্চ করলে বহু সাইট পাবেন যেখানে ছবি রেখে শেয়ার করা যায়, বিক্রি করা যায়। এখানে উদাহরন হিসেবে ছবি শেয়ার এবং বিক্রির কয়েকটি সাইটের ঠিকানা এবং পরিচিতি দেয়া হচ্ছে;

সবচেয়ে জনপ্রিয় সোস্যাল নেটওয়ার্ক সাইট। অন্যদের সাথে ছবি শেয়ার করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন।

বলা হয় এখানে যত পরিমান ছবি রয়েছে তা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। বিনামুল্যে সদস্য হয়ে আপনার ছবি অন্যদের দেখাতে পারেন। অন্যদের ছবি দেখে শিখতে পারেন।

গুগলের বিনামুল্যের ছবি শেয়ারিং সাইট।

এখানে বিনামুল্যে ছবি এবং ভিডিও রাখা যায় অন্যদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সবসময়ই ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে অংশ নিয়ে পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

প্রফেশনালদের জন্য সাইট। ওপরে যাকিছু সুবিধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার সবই রয়েছে এদের।

ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম ৩

ফটোগ্রাফারদের কাছে এডবি লাইটরুম অত্যন্ত জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যায় আগে ফটোশপ ব্যবহার করতেন এমন অনেকে লাইটরুমের দিকে যাচ্ছেন। এথেকে এটুকু ধারনা করা যায় এতে নিশ্চয়ই এমন কিছু সুবিধে রয়েছে যা ফটোশপ থেকেও বেশি সুবিধে দেয়।

সরলভাবে বিষয়টা দেখা যাক। ফটোগ্রাফাররা প্রচুর ছবি উঠান। কাজেই তাদের কাজ করতে হয় শতশত ছবি নিয়ে। ফটোশপ বেশি ছবি ব্যবহারের সুযোগ দেয় না। একটি একটি করে ছবি নিয়ে কাজ করতে হয়। এই সুবিধে পাওয়া যায় লাইটরুমে।
ফটোগ্রাফারদের প্রয়োজন মুলত ছবির আলো ঠিক করা। কোথাও কমানো, কোথাও বাড়ানো। তাদের নিশ্চয়ই অনেকগুলি লেয়ার নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন নেই, কিংবা প্রয়োজন নেই পেইন্ট করা। কাজেই সেদিক থেকে লাইটরুম ফটোশপের তুলনায় সরল সফটঅয়্যার।
ফটোশপ নিজেই অত্যন্ত শক্তিশালী সফটঅয়্যার। তারওপর রয়েছে অসংখ্যা প্লাগইন। ছবির নয়েজ দুর করা থেকে শুরু করে স্পেশাল ইফেক্ট পর্যন্ত সব ধরনের কাজের জন্য প্লাগইন রয়েছে। এই প্লাগইনগুলির অধিকাংশই ব্যবহার করা যায় লাইটরুমেও। তাহলে আর ফটোশপ প্রয়োজন কি।
আর সবকথার বড় কথা, ফটোশপের দাম লাইটরুম থেকে অনেক বেশি। কাজেই ফটোগ্রাফরদের পছন্দ লাইটরুম।
লাইটরুম সফটঅয়্যারটি প্রচলিত সফটঅয়্যারগুলি থেকে একটু পৃথক। ফটোশপে আপনি একটি ছবি ওপেন করবেন, তাকে পরিবর্তণ করবেন, তারপর সেভ করবেন। প্রয়োজনে আগেরটি ঠিক রেখে ভিন্ননামে সেভ করবেন। লাইটরুম তৈরী করা হয়েছে বহুসংখ্যক ছবি নিয়ে কাজ করার জন্য, এবং ধরেই নেয়া হয়েছে আপনি মুল ছবিগুলিকে অক্ষত রেখে কাজ করবেন। কাজেই কোন ইমেজ ওপেন করার আগেই আপনি কিছু বিষয় ঠিক করে নেবেন। যেমন আপনার মুল ইমেজগুলি কোথায় থাকবে, পরিবর্তন করা ইমেজগুলি কোথায় থাকবে। কখনোই আপনার মুল ইমেজের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। আপনি ইমেজ ওপেন করতে পারেন ক্যামেরার মেমোরী কার্ড থেকে অথবা হার্ডডিস্কে কপি করার পর। কিংবা ওপেন করার সময়ই আপনি সেখানে মেটাডাটা যোগ করতে পারেন।

লাইটরুম ইন্টারফেস
লাইটরুম ওপেন করলে আপনি এধরনের একটি ইন্টারফেস দেখবেন। ইন্টারফেসটি তুলনামুলক সরল, তারপরও এখানে লক্ষ্য করার মত বেশকিছু গুরুত্বপুর্ন অংশ রয়েছে।
বামদিকে অবশ্যই সফটঅয়্যারের নাম লেখা। এর ডানদিকে Library, Develop, Slideshow, Print, web লেখা মডিউল পিকার। নাম থেকেই ধারনা করা যায় এগুলির কাজ যথাক্রমে ফাইল ম্যানেজমেন্ট, ছবির পরিবর্তন, ছবিগুলির স্লাইডশো দেখা, প্রিন্ট করা এবং ইন্টারনেটে ব্যবহার করা।
আপনি যে ছবি নিয়ে কাজ করবেন সেটি দেখা যাবে মাঝখানে। একটি ছবিকে বড় করে দেখা যেতে পারে, অথবা অনেকগুলি ছবির প্রিভিউ দেখা যেতে পারে। কিভাবে দেখবেন সিলেক্ট করা যাবে ছবির নিচের অংশ থেকে। এর ডানপাশের স্লাইডার ব্যবহার করে ছবির জুম নিয়ন্ত্রন করা যাবে।
মুল স্ক্রিনের দুপাশে রয়েছে দুটি প্যানেল। সিলেক্ট করা মডিউলের ওপর নির্ভর করে এগুলি পরিবর্তিত হয়। যেমন Library সিলেক্ট করলে বামদিকে ফোল্ডার, ক্যাটালগ ইত্যাদি অপশন এবং ডানদিকে হিষ্টোগ্রাম, কুইক ডেভেলপ, মেটাডাটা ইত্যাদি অপশন পাওয়া যাবে। আর Develop সিলেক্ট করলে বামদিকে প্রিসেট, স্নাপশট ইত্যাদি অপশন, ডানদিকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের অপশন পাওয়া যাবে। যে কোন অপশনের নামের ওপর অথবা পাশের ত্রিকোনাকার চিহ্নে ক্লিক করে সেটা ওপেন করা যাবে।
একেবারে নিচের দিকে রয়েছে ফিল্মষ্ট্রিপ। ইমপোর্ট করা ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে এখানে। যে কোনটিতে ক্লিক করলে তাকে একটিভ ইমেজ হিসেবে মাঝের উইন্ডোতে পাওয়া যাবে। ফিল্মষ্ট্রিপের উইন্ডোর ডিভাইডার ব্যবহার করে বড়ছোট করে থাম্বনেইলের আকার বড়-ছোট করা যাবে।


ইমপোর্ট করা
প্রথমবার লাইটরুম চালু করলে আপনি কোন ইমেজ পাবেন না। ইমেজ ব্যবহারের জন্য আপনাকে সেগুলি ইমপোর্ট করতে হবে। এখানে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
লাইটরুমে প্রায় সবধরনের বিটম্যাপ ইমেজ, সব ধরনের র, সিএমওয়াইকে এবং নতুন ভার্শনে (৩.০) তে ভিডিও ফরম্যাট ইমপোর্ট করা যাবে।
·        ইমপোর্ট করার জন্য মডিউল সিলেক্ট করুন। এরপর বামদিকের প্যানেলের নিচের দিকে Import বাটনে ক্লিক করুন (অথবা মেনু থেকে কমান্ড দিন)। বামদিকের প্যানেলে সোর্স হিসেবে ড্রাইভ/সংযুক্ত মেমোরীকার্ড ইত্যাদি দেখা যাবে।
·        ড্রাইভ সিলেক্ট করুন। যে ফোল্ডারে ছবিগুলি রয়েছে সেটি সিলেক্ট করুন। ভেতরের ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে। অপশন ক্লিক করে সাবফোল্ডারের ইমেজগুলি ব্যবহার করতে পারেন অথবা এটি অফ করে নির্দিষ্ট একটি ফোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
·        প্রিভিউ উইন্ডোতে লক্ষ করলে প্রতিটি ইমেজের ওপরে একটি টিক চিহ্ন দেখা যাবে। কোন ছবিকে ইমপোর্ট কাজ থেকে বাদ দেয়ার জন্য সেই ছবির টিক চিহ্ন উঠিয়ে দিন। প্রয়োজনে গ্রিড ভিউ এর বদলে লুপ ভিউ ব্যবহার করে ইমেজকে বড় করে দেখে নিতে পারেন।
·        ইমপোর্ট কিভাবে করা হবে সেজন্য জন্য ৪টি অপশন রয়েছে প্রিভিউ উইন্ডোর ওপরে। Copy to DNG অপশন প্রতিটি ফাইলকে প্রথমে অন্য ফোল্ডারে কপি করবে এবং তাদেরকে DNG তে কনভার্ট করবে।  Copy সিলেক্ট করলে সবগুলিকে নতুন ফোল্ডারে কপি করবে, Move সিলেক্ট করলে সবগুলি ইমেজকে অন্য যায়গায় সরিয়ে নেবে (যেমন মেমোরীকার্ড থেকে হার্ডডিস্কে) এবং Add সিলেক্ট করলে ফোল্ডারের কোন পরিবর্তন না করে সরাসরি ইমপোর্ট করবে।
·        ডানদিকের প্যানেলটি একবার যাচাই করে নিন। Render Preview অংশে ৪টি অপশন রয়েছে। মুলত প্রিভিউ এর মান ঠিক করার জন্য এই অপশনে পরিবর্তন করবেন। ভাল মান ব্যবহার করলে বেশি সময় প্রয়োজন হবে।
·        Don’t Import Suspected Duplicates সিলেক্ট করা থাকলে একই ইমেজ দুবার ইমপোর্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাতিল করবে।
·        সবকিছু ঠিক করা হলে নিচে ডানদিকে ইমপোর্ট বাটনে ক্লিক করুন। সিলেক্ট করা ইমেজগুলি ইমপোর্ট হবে।


বেসিক এডিটিং
·        ইমপোর্ট করার পর কোন ছবি এডিট করার জন্য মডিউলে যান।
·        নিচের ফিল্মষ্ট্রিপ থেকে সেটি সিলেক্ট করুন।
·        ডানদিকে প্যানেল থেকে Basic ট্যাব ওপেন করুন। এখানে Temperature, Color, Exposure, Recovery, Fill light, Blacks, Brightness, Contrast, Clarity ইত্যাদি সবকিছু পরিবর্তন করার জন্য স্লাইডার পাওয়া যাবে। যে কোনকিছু পরিবর্তনের সাথেসাথে তার প্রিভিউ দেখা যাবে।
·        Tone Curve, HSL, Effect ইত্যাদি ট্যাব ওপেন করে সেখানে পরিবর্তন করতে পারেন। আপনি নিশ্চয়ই জানেন এখানে কি করতে হয়।


এক্সপোর্ট করা 
ছবির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার পর চুড়ান্ত ছবি পাওয়ার জন্য মেনু থেকে File - Export কমান্ড ব্যবহার করুন। এক্সপোর্ট মেনুতে ফোল্ডারের নাম বলে দেয়াসহ আউটপুট ইমেজের ফরম্যাট, সাইজ ইত্যাদি বলে দেয়া যাবে।

দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন

যারা ছবি উঠান তাদের স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন, কিসের ছবি উঠাব? অনেকেই ছবি উঠানোর জন্য বনে-পাহাড়ে যান একথা ঠিক। সেখানে তারা যে দৃশ্য উঠানোর সুযোগ পান তা অন্যভাবে পাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু আপনার চারিদিকে যাকিছু রয়েছে সেখান থেকেই পেতে পারেন দৃষ্টিনন্দন ছবি।
উদাহরনের এই ছবিটি দেখুন। দুটি পাতার ছবি উঠানোর জন্য নিশ্চয়ই আপনার বনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ছবিটি ঢাকা শহরে উঠানো।
কিংবা এই কৃষ্ণচুড়ার ডালটি। যে কোন ফুলগাছেই আপনি পেতে পারেন এমন একটি অংশ।

কিংবা কাছ থেকে ওঠানো এই মাকড়সার দল।
কিংবা ঘরের দেয়ালে সাধারন টিকটিকি।
ভাল ছবির জন্য আপনার দৃষ্টিভঙ্গিই যথেষ্ঠ। ক্যামেরার দৃষ্টিতে দেখা অভ্যেস করুন, সাধারন বিষয়কেও অসাধারনভাবে ছবিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে।

মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি

ছবি উঠানোর সময় হাত এবং ক্যামেরা স্থির রাখবেন, সম্ভব হলে ট্রাইপড ব্যবহার করবেন অথবা কোথাও ঠেস দিয়ে দাড়াবেন, বেশি সাটার স্পিড ব্যবহার করবেন, ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করবেন এসব কথা শুনেই আপনি অভ্যস্থ। এর বিপরীত দিক কি কখনো ভেবে দেখেছেন। ছবি উঠানোর সময় ইচ্ছে করে ক্যামেরা নাড়ানো। ফটোগ্রাফিতে এর নাম মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি।
মুল বিষয় হচ্ছে সাটার স্পিড কম ব্যবহার করবেন যেন বেশি সময় ধরে এক্সপোজার পাওয়া যায়। যতক্ষন সাটার খোলা থাকবে সেই সময়ে ক্যামেরা নাড়াবেন। আলোর যায়গাগুলি একধরনের গতিশীল আলোকপথ তৈরী করবে।
একেবারে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজটি না করে একেই নিজের পছন্দমত কাজে ব্যবহার করতে পারেন। যেমন জুম ইফেক্ট।
Aperture Priority  মোড সিলেক্ট করুন। এপারচার ২২ সেট করুন। যে বিষয়ের ছবি উঠাবেন সেখানে ফোকাস করুন। সাটার রিলিজ চেপে ছবি উঠানোর সময় দ্রুত জুম কম বা বেশি করুন। আলোকরশ্মির ইফেক্ট পাবেন এরফলে।
অথবা ব্যবহার করতে পারেন রোটেশন ইফেক্ট। ছবি উঠানোর সময় ক্যামেরা বৃত্তকারে ঘুরান, অথবা আপনি নিজেই ক্যামেরা সহ ঘুরুন। হয়ত স্পষ্ট বিষয় পাবেন না কিংন্তু রঙের বৈচিত্র থাকলে মজাদার কিছু পাবেন। উদাহরনের ছবিটি মাথার ওপর বড়বড় গাছের।
অথবা বাগানে ফুলের ছবি উঠানোর সময় সাটার স্পিড একেবারে কমিয়ে ইচ্ছেমত ক্যামেরা ঘুরান। একেবারে ভিন্ন ধরনের ছবি পাবেন। ক্যামেরা ওপরে নিচে করে আরেকধরনের ইফেক্ট পেতে পারেন।
জুম ইফেক্ট এর জন্য এসএলআর অথবা জুম-রিং ব্যবহার করা যায় এমন ক্যামেরা প্রয়োজন হবে। অন্য ইফেক্টগুলি ব্যবহার করা যাবে যে কোন ক্যামেরায়।

সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করুন

ছবি উঠানোর সময় এপারচার, সাটার স্পিড, আইএসও ইত্যাদি বিষয় এতটাই গুরুত্বপুর্ন যে হোয়াইট ব্যালান্স বিষয়টি অনেকসময়ই গুরুত্ব পায় না। ফল হিসেবে ছবিতে পাওয়া যায় কখনো নিলচে, লালচে বা সবজেটে ভাব। হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে এই সমস্যা দুর করা যায় সহজেই।
একচু জেনে নেয়া যাক হোয়াইট ব্যালান্স বিষয়টি কি ?
ছবিতে সবচেয়ে আলোকিত এবং সবচেয়ে অন্ধকার দুটি বিন্দুর কথা চিন্তা করুন। সবচেয়ে আলোকিত অংশের রং হওয়ার কথা একেবারে সাদা, সবচেয়ে অন্ধকার অংশ হওয়ার কথা একেবারে কালো। সাদাকে পুরোপুরি সাদা দেখানোর ব্যবস্থাকে বলে হোয়াইট ব্যালান্স।
এর পেছনে রয়েছে কিছুটা আলো তত্ত্ব। প্রতিটি রঙের রয়েছে সাদার তুলনায় নিজস্ব বৈশিষ্ট। একে পরিমাপ করা হয় কেলভিন তাপমাত্রার স্কেলে এবং নাম কালার টেম্পারেচার। আলট্রাভায়োলেট শর্ট ওয়েব লেন্থের কালার টেম্পারেচার বেশি, যেমন সাদা হচ্ছে ৫৬০০ ডিগ্রী কেরভিন, অন্যদিকে ইনফ্রারেড লং ওয়েভের টেম্পারেচার কম, ২০০০ ডিগ্রী কেলভিন। বেগুলি থেকে লালের দিকে মাঝের রংগুলি ক্রমাম্বয়ে নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিভাবে কালার টেম্পারেচার হচ্ছে কার্বনকে উত্তপ্ত করলে বিভিন্ন কেলভিন টেম্পারেচারে রঙের যে পরিবর্তন হয় সেটা। যেমন ২০০০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় কার্বনের রং লাল। ৫৬০০ ডিগ্রীতে একেবারে সাদা।
সুর্যের উদাহরন বিবেচনায় আনতে পারেন। দুপুরে যখন কালার টেম্পারেচার সবচেয়ে বেশি তখন আমরা সাদা আলো পাই, অন্যদিকে সুর্যোদয় কিংবা সুর্যাস্তের সময় কৌনিক অবস্থানের কারনে কালার টেম্পারেচার কমে যায়, আমরা পাই লালচে এবং হলদেটে সোনালী আলো।
আমরা চোখে দেখার সময় খুব সহজে চোখ তারসাথে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ক্যামেরা নিজে থেকে সেটা করে না। ফল হিসেবে সুর্যাস্তের ছবি উঠানোর সময় যদি দুপুরের কালার টেম্পারেচারের হোয়াইট ব্যালান্স সেটিং ব্যবহার করা হয় সেখানে লালচে-হলুদ রং থাকবে না। আপনিও সঠিক রং পাবেন না। হোয়াই ব্যালান্স সেটিং এর দিকে দৃষ্টি দিয়ে আপনি পেতে পারেন নিখুত রঙের ছবি।
অধিকাংশ ক্যামেরায় হোয়াইট ব্যালান্স সেটিং এর জন্য কয়েকটি অপশন থাকে। এদের একটি অবশ্যই অটো যেখানে ক্যামেরা নিজেই আলো বিশ্লেষন করে ঠিক করে নেয় কোন ধরনের হোয়াইট ব্যালান্স ব্যবহার করবে। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা এটা ব্যবহার করেন সবচেয়ে কম।
এছাড়া থাকে সরাসরি সুর্যের আলো, মেঘলা দিন, ছায়া, মোমের আলো, ফ্লুরোসেন্ট টিউবের আলো, সাধারন আলো, ফ্লাশ ইত্যাদি নাম। যখন যে আলোয় ছবি উঠাতে চান তখন সেটা সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফাররা এতে সন্তুষ্ট নন (সেকারনেই তাদের ছবি ভাল হয়)। তাদের জন্য কিছু ক্যামেরায় রয়েছে ডিগ্রী কেলভিন মান দেখে হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করা। এজন্য আপনাকে জানতে হবে কোন আলোর কালার টেম্পারেচার মান কত। কাজটি কঠিন।
অনেক ক্যামেরায় যেখানে ছবি উঠাচ্ছেন সেখানকার কালার টেম্পারেচার যাচাই করার ব্যবস্থা থাকে। একমাত্র এভাবেই একেবারে সঠিক কালার টেম্পারেচার ব্যবহার করা সম্ভব।
যেমন নাইকন ডি৯০ ক্যামেরাকে উদাহরন হিসেবে দেখুন,
.          মেনু থেকে Preset Manual সিলেক্ট করুন
.          যেখানে ছবি উঠাবেন সেই পরিস্থিতিতে একটি সাদা কাগজ (অথবা একেবারে সাদা অন্যকিছু) রাখুন
.          Aparture Priority মোডে যান
.          হোয়াইট ব্যালান্স বাটন চেপে ধরে কমান্ড ডায়াল ঘুরাতে থাকুন যতক্ষন না প্রিসেট দেখা যায়।
.          হোয়াইট ব্যালান্স বাটন ছেড়ে দিন, এরপর আবারও চেয়ে ২ সেকেন্ড ধরে রাখুন। ডিসপ্লেতে প্রিসেট আইকণ ব্লিংক করতে থাকবে।
.          পুরো স্ক্রিনে সাদা কাগজটি ফোকাস করুন।
.          সাটার রিলিজ বাটন চাপ দিন।

কোন ছবি উঠবে না কিন্তু ক্যামেরা সেই পরিস্থিতির  হোয়াইট ব্যালান্স এর জন্য মান রেকর্ড করবে। সঠিক মান রেকর্ড হলে ডিসপ্লেতে Good লেখা পাবেন।
পরিবেশ কিংবা আলোর পরিবর্তনের সাথেসাথে এই মানও পরিবর্তিত হতে পারে। কাজেই যায়গা বা সময় পরিবর্তনের পর আপনাকে পুনরায় এই সেটিং ঠিক করে নিতে হতে পারে। বড়জোর কয়েক সেকেন্ড সময় লাগবে এটা করতে। আপনার ক্যামেরায় যদি এই ব্যবস্থা থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন।

*** অন্য ক্যামেরার জন্য পদ্ধতিতে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে। সেটা জানার জন্য আপনার ক্যামেরার ম্যানুয়েল দেখুন।

কি দেখে কিনবেন

আপনাকে যদি ক্যামেরা (অথবা ভিডিও ক্যামেরা) নিয়ে বাইরে যেতে হয় তাহলে প্রয়োজনীয় জিনিষগুলির একটি হচ্ছে ব্যাগ কিংবা কেস। ক্যামেরা এবং অন্যান্য সবকিছুকে শুধু সহজে বহন করাই না, বরং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ক্যামেরাকে রক্ষা করে এগুলি। এমনকি হঠাত আসা বৃষ্টি থেকেও।
আপনার প্রয়োজনীয় ব্যাগ বাছাই করার জন্য যে বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে;
ব্যাগের মাপ
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় হচ্ছে যে আপনার ক্যামেরার মাপের সাথে ব্যাগ মানানসই কিনা। যদি কম্প্যাক্ট ক্যামেরা হয় তাহলে কোমড়ে ঝুলানো পাউচ থেকে শুরু করে ছোট আকারের সোল্ডার ব্যাগ যথেস্ট হতে পারে। যদি এসএলআর হয়, সাথে একাধিক লেন্স এবং ফ্লাশ থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাদের সবগুলির জন্য যায়গা আছে দেখে ব্যাগ পছন্দ করতে হবে। বডিসহ একটি লেন্স, ২টি লেন্স, ৩টি লেন্স ইত্যাদি নানাধরনের মাপে ব্যাগ তৈরী করা হয়। এর ওপর রয়েছে মডেলের বিষয়। এসএলআর ক্যামেরাগুলি ছোট, মাঝারী, বড় এই প্রধান তিনটি মাপের হয়। ব্রান্ড ভিত্তিক পার্থক্যও রয়েছে। আপনি নাইকন ক্যামেরার ব্যাগ কেনার সময় ক্যানন ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যবহার কিনবেন না এটাই স্বাভাবিক। কাজেই ব্যাগ কেনার আগে নির্দিস্ট মডেল এবং সাথে আনুসাঙ্গিক যাকিছু রয়েছে সেগুলি হিসেব করে ব্যাগ খোজ করুন।
নির্দিষ্টভাবে ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যাগই ব্যবহার করুন। সেখানে ক্যামেরা এবং লেন্সের জন্য সঠিক মাপের যায়গা করা থাকে।
ব্যাগের ধরন
ক্যামেরা ব্যাগের জন্য কয়েকটি ধরন প্রচলিত, হোলষ্টার, স্লিং, সোল্ডার, ব্যাকপ্যাক, রোলিং ইত্যাদি। একেবারে ছোটর জন্য হোলষ্টার, ছোট থেকে মাঝারী ক্যামেরার জন্য সোল্ডার, ছোট-মাঝারী থেকে বড়র জন্য  ব্যাকপ্যাক এবং একেবারে বড় ব্যাগ হিসেবে রোলিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। আপনি যেধরনের ব্যাগ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেধরনের ব্যাগ বেছে নিন। সাধারনত যারা বন-জঙ্গল-পাহাড়ে ছবি উঠাতে যান তারা পছন্দ করেন সোল্ডার অথবা ব্যাকপ্যাক।
সফট ব্যাগগুলি এধরনের কাজের জন্য বেশি উপযোগি। আর গাড়িতে চলাফেরা করলে কেস (বাক্সের মত) ব্যবহার বেশি নিরাপদ। আঘাত পেলেও ক্যামেরার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
কি দিয়ে, কিভাবে তৈরী
ব্যাগ কত ভালভাবে তৈরী তার ওপর নির্ভর করে সেটা ক্যামেরাকে কতটা নিরাপত্তা দেবে। ভাল ব্যাগগুলি দীর্ঘস্থায়ী। অনেক ব্যাগই ওয়াটারপ্রুফ। বৃষ্টির ঝাপটা এলেও ভেতরে পানি ঢোকে না। ব্যাগটি কোন ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরী সেটা দেখে নেয়া জরুরী।
যারা প্রকৃতির ছবি উঠান তারা পরিবেশবান্ধব জিনিষপত্র ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। যেমন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তাদের তৈরী ব্যাগ সম্পর্কে বলে সেগুলি পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব। তাতে প্লাষ্টিক জাতিয় কোনকিছু ব্যবহার করা হয় না। ক্যানভাস কাপড় এবং মেটাল ব্যবহার করা হয়।
ব্যাগের দাম
দাম অবশ্যই একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে কমদামী ব্যাগ পাওয়া যায়, মাঝারী ব্যাগের জন্য ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। কেসের দাম আরো বেশি। কিন্তু আপনি যখন লক্ষ টাকার ক্যামেরা বহন করবেন তখন এখানেই বা খরচ কমাবেন কেন ? আপনার মুল্যবান ক্যামেরা রক্ষার জন্য খরচ কিছুটা বেশি হলেও ভাল ব্যাগ ব্যবহার করুন।
একেবারে কমদামে কিছু ব্যাগ পাওয়া যায় যেগুলি বাইরে থেকে মুল কোম্পানীর ব্যাগের মতই দেখায়। সেগুলি কেনার সময় ক্যামেরা, লেন্স ইত্যাদির জন্য প্যাডের ব্যবস্থা আছে কিনা, ক্যামেরা নড়াচড়া করবে কিনা এই বিষয়গুলি দেখে নিন।
ব্যাগ দেখতে কেমন
আপনি নিশ্চয়ই এমন ব্যাগ চান যা আপনার মনের মত সুন্দর। ব্যাগের ডিজাইন, রং ইত্যাদি ব্যাক্তিগত পছন্দের বিষয়। তারপরও, একজন ফটোগ্রাফার সুন্দর কিছু পছন্দ করবেন এটাই স্বাভাবিক। এদিকটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখে নিন।  
ব্যাগ কার তৈরী
যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যাগ কোন কোম্পানী তৈরী করেছে তাতে কিছু যায় আসে না। তাহলেও যারা ব্যাগ তৈরী করে খ্যাতিলাভ করেছে তাদের ওপর নির্ভর করা তুলনামুলক সহজ। কাজেই ব্যাগ কেনার সময় বিশ্বখ্যাত নাম যেমন lowepro, Kata, National Geographic, Think Tank, Domke, Crumpler, Tamrac, M-Rock, Billingham এদের প্রাধান্য দিতে পারেন।
ব্যাগ কেনার আগেই ইন্টারনেটে সেই ব্যাগ সম্পর্কে জেনে নিন। এজন্য www.cambags.com এর মত ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।

ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স

ক্যামেরা কিংবা ছবি উঠানোর কথা বললেই কিছু শব্দ শোনা যায়, ওয়াইড এঙ্গেল, টেলিফটো, ফোকাল লেন্থ ইত্যাদি। কিংবা লেন্সের ক্ষেত্রে বলা হয় অত মিলিমিটার। এই বিষয়গুলি ঠিক কি বুঝায়, ছবিতে এর কি প্রভাব পরে নতুন ফটোগ্রাফারদের কাছে অনেকটাই অশ্পষ্ট মনে হতে পারে। বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হয়ত লক্ষ করেছেন ডিজিটাল ক্যামেরার তুলনা করা হয় ৩৫মিলিমিটার ক্যামেরার সাথে। আগেকার দিনের ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরাকেই এখনও ষ্ট্যান্ডার্ড ধরে তারসাথে তুলনা করা হয়। যেমন উল্লেখ করা হল অমুক লেন্স ১৮-৮৫ মিমি, এরপরই উল্লেখ করা হয় ৩৫ মিমি এর তুলনায়।
খালিচোখে আমরা যেমন দেখি ছবিতে যদি ঠিক তেমনটি পেতে চাই তাকে বলতে পারি নরম্যাল লেন্স। হিসেব করে দেখা গেছে ৫০ থেকে ৫৫ মিমি পর্যন্ত লেন্সে এধরনের ছবি পাওয়া যায়। কাজেই লেন্সের হিসেবে এগুলি ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স নামে পরিচিত।
যদি এরথেকে কম ফোকাল লেন্থ হয় তাহলে সামনের দৃশ্য খালিচোখে যতটা দেখা যায় তারথেকে বেশি দেখা যাবে। লেন্স অনেক বেশি কৌনিক দৃশ্য ধারন করে, সেকারনে একে বলা হয় ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স। মুলত ৩৫ মিমি এর নিচের ফোকাল লেন্ধের লেন্সগুলি ওয়াইড এঙ্গেল নামে পরিচিত। এঙ্গেলের পরিমান যদি খুব বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্য গোলাকার ধারন করে। অনেকটা মাছের চোখের মত বলে এর নাম ফিস-আই লেন্স।
আবার বিপরীতভাবে ফোকাল লেন্থ যদি বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্যের জন্য কোন ছোট হয়ে আসে এবং নির্দিষ্ট অংশ দেখা যায়। একে ন্যারো এঙ্গেল লেন্স বলতে পারেন, তবে বাস্তবে একে বলা হয় লং ফোকাস লেন্স, কিংবা টেলিফটো লেন্স কিংবা জুম লেন্স।
নির্দিস্টভাবে লেন্সের যে ভাগগুলি রয়েছে তা হচ্ছে
ফিসআই লেন্স : ৬ থেকে ৮ মিমি। অন্তত ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত ধারন করতে পারে। কখনো কখনো ২২০ ডিগ্রী পর্যন্ত (ক্যামেরার পেছন দিকে) ধারন করার মত লেন্সও রয়েছে।
ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স : ১৮ থেকে ৩৫ মিমি পর্যন্ত। সাধারন কাজের জন্য এগুলি ব্যবহার করা হয়। এতে ডেপথ অব ফিল্ড বেশি পাওয়া যায়, ফলে ল্যান্ডস্কেপ, ইন্টেরিয়র, আর্কিটেকচার ইত্যাদি কাজের জন্য বেশি উপযোগি।
ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স : ৫০ মিমি। মানুষের চোখে দেখার কাছাকাছি বলে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। অনেক বেশি এপারচার ব্যবহার করা যায় বলে কম আলোতে ভাল ছবি পাওয়া যায়।
লং ফোকাস লেন্স : ৮০ থেকে ৪০০ মিমি। বিষয়কে অনেক বড় দেখা যায় বলে দুরের কোনকিছু ছবি উঠানোর জন্য বেশি উপযোগি। স্পষ্টভাবে দুরের কিছুর ছবি উঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। দুরত্ব বাড়ার সাথেসাথে ডেপথ অব ফিল্ড কমে যায়।
সুপারজুম বা এক্সট্রিম লং ফোকাস লেন্স : ৪০০ মিমি এর ওপর লেন্সকে এই দলে ফেলা হয়। পাখি বা বন্য প্রানী এই ধরনের বিষয়ের জন্য বেশি উপযোগি। অনেকসময় একে টেলিফটো লেন্সও বলা হয়। সাধারনত এগুলি আকারে বড় এবং ওজন বেশি বলে ট্রাইপড ব্যবহার করতে হয়। ষ্টেডিয়ামে খেলার সময় সাংবাদিকরা এগুলি ব্যবহার করে দুর থেকে ছবি উঠান।
এর বাইরে কিছু বিশেষ ধরনের লেন্স রয়েছে। যেমন;
ম্যাক্রো লেন্স : মাছির চোখ কিংবা ঘাসের ছোট একটি ফুল কাছ থেকে উঠানোর জন্য বিশেষ ধরনের এই লেন্স ব্যবহার করা হয়। যদিও এর ফোকাল লেন্স ৫০ থেকে ২০০ মিমি, এতে বিশেষভাবে ফোকাস করার কারনে বিষয়কে অনেক বড় আকারে পাওয়া যায়। এক্সটেনশন টিউব নামে একধরনের এডাপটার ব্যবহার করে সাধারন লেন্সকে ম্যাক্রো লেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেকে নিজেই এধরনের টিউব তৈরী করে নেন। মুলত ক্যামেরা থেকে মুল লেন্সকে কিছুটা দুরত্বে রেখে একাজ করা হয়।
জুম এডাপটার : কোন লেন্সের সর্বোচ্চ ফোকাল লেন্থকে আরো বাড়ানোর জন্য একধরনের এডাপটার ব্যবহার করা হয়। ২এক্স এডাপটার ব্যবহারের অর্থ লেন্সের আগের ফোকাল লেন্থকে দ্বিগুন করা। ক্যামেরা এবং লেন্সের মাঝখানে একে লাগানো হয়।

পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির জন্য গুরুত্বপুর্ন বিষয়গুলি

অধিকাংশ মানুষ সুন্দর বাগান, সমুদ্র, পাহাড় এসবের ছবি উঠাতে পছন্দ করেন। কিন্তু বাস্তব সত্য তো এটাই, সবচেয়ে প্রিয় ছবি হচ্ছে পরিচিত কারো পোর্ট্রেট। পরিবারের কোন সদস্য কিংবা বন্ধু। কিছু বিষয় লক্ষ্য করে করে আপনি অনায়াসে পেতে পারেন ভাল মানের পোর্ট্রেট।

ঠিক যায়গায় ছবি উঠান
সাধারনত পোর্টেট ফটোগ্রাফিতে মুল ব্যক্তির দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়, ব্যাকগ্রাউন্ডের দিকে ততটা দৃষ্টি দেয়া হয় না। ভাল পোর্ট্রেটের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড গুরুত্বপুর্ন। ব্যাকগ্রাউন্ডে বৈচিত্র যত কম থাকে তত ভাল। একটি ইটের দেয়াল, সবুজ মাঠ কিংবা একরঙা পর্দা এগুলি ভাল পোর্ট্রেট ইমেজ তৈরী করতে পারে। বিপরীতভাবে অগোছালো ব্যাকগ্রাউন্ড ছবির সামঞ্জস্য নষ্ট করে। অগোছালো গাছের ডাল, ঘরের ফার্নিচার ইত্যাদি কম্পোজিশনে সমস্যা তৈরী করতে পারে। ছবি উঠানোর আগে ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নিন। হয়ত সামান্য কয়েকপা সরে গেলেই আরো সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড পেতে পারেন।
ঘরে উচুমানের আলোর ব্যবস্থা না থাকলে যতটা সম্ভব  বাইরে ছবি উঠান। রৌদ্রজ্জ্বল দিন হোক আর মেঘলা দিনই হোক, ঘরের সাধারন লাইটের আলো থেকে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

ক্যামেরা সেটিং ঠিক রাখুন
ক্যামেরা পোর্ট্রেট মোড বলে একটি সেটিং রয়েছে। এই মোড ব্যবহার করুন। পোর্ট্রেট এর জন্য ডেপথ অব ফিল্ড, সাটার স্পিড, এপারচার ইত্যাদি যাকিছু প্রয়োজন ক্যামেরা ঠিক করে নিবে। অনেক ক্যামেরাতেই ফেস ডিটেকশন রয়েছে। ক্যামেরা নিজে থেকেই মুখের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ফোকাস করবে। এছাড়াও অনেক ক্যামেরায় স্মাইল ডিটেকশন রয়েছে যা শুধুমাত্র হাসার সময় ছবি উঠাবে, ব্লিংক ডিটেকশন চোখ বন্ধ আছে কিনা যাচাই করে ছবি উঠাবে।
ফ্লাশের দিকেও দৃষ্টি দিন। ফ্লাশের জন্য ফিল ফ্লাশ বলে সেটিং থাকার কথা। যদি আপনার ক্যামেরায় থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন। এই সেটিংএ ছবি উঠানোর আগেই আলো তৈরী হয়, ফলে রেড আই নামের লাল চোখের সমস্যা এড়ানো যায়।

আলো ঠিকভাবে ব্যবহার করুন
ব্যক্তির মুখে আলো কোনদিক থেকে কতটুকু আসছে লক্ষ্য করুন। যদি পিছনে উজ্জ্বল আলো থাকে এবং মুখের ওপর আলো কম থাকে তাহলে ভাল ছবি পাবেন না। বাইরে ছবি উঠানোর জন্য সকালে এবং সন্ধ্যার আগে পাওয়া যায়, যখন আলোর প্রখরতা কম থাকে। দিনের মাঝামাঝি সময় ছায়ায় ছবি উঠাতে চেষ্টা করুন। ছায়ায় ফ্লাশ ব্যবহার করে মুখে আলো ফেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
ফ্লাশের আলো কমবেশি করার ব্যবস্থা থাকলে দুরত্ব অনুযায়ী সেটা ঠিক করে নিন।

ফ্রেম পুরন করুন
আপনি যতটুকু উঠাতে চান ঠিক ততটাই ফ্রেমের মধ্যে রাখুন। চারিদিকের অতিরিক্ত যায়গা বাদ দিন। প্রয়োজনে কাছে যান অথবা জুম লেন্স ব্যবহার করুন।

হাসিমুখের ছবি উঠান, স্বাভাবিক ভঙ্গির ছবি উঠান
সরাসরি ক্যামেরার দিকে না তাকিয়ে অন্যকিছুর দিকে তাকাতে বলুন এবং হাসিমুখ করতে বলুন। তাকে তৈরী হতে সময় দিন। যতটা সম্ভব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ছবি উঠান। কখনো কখনো দাত বের করা হাসির চেয়ে চোখের দৃষ্টি কিংবা অন্য কোন অভিব্যক্তি উচুমানের ছবি পেতে সাহায্য করে।